ধৃত দুই অভিযুক্ত রিঙ্কু শাহ ও কৈলাস কুমার। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী
টাটানগর স্টেশন থেকে পুরুলিয়ার ঝালদার শিশুটিকে চুরি করার জন্য রিঙ্কু সাউয়ের সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকার চুক্তি করেছিল কৈলাস কুমার। শুক্রবার এমনই দাবি করল ঝাড়খণ্ড পুলিশের একটি সূত্র। মেয়েটিকে অপহরণ, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত রিঙ্কু এর আগেও দু’টি শিশুকে অপহরণ করেছিল। কিন্তু শিশুটির মায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ মনু মণ্ডলের সঙ্গে কৈলাস বা রিঙ্কুর সম্পর্ক ঠিক কী, তা স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে। ঝাড়খণ্ড পুলিশের এক কর্তা জানান, তদন্তে সব সম্ভাবনাই দেখা হচ্ছে।
২৪ জুলাই টাটানগর স্টেশন থেকে তিন বছরের মেয়েটিকে অপহরণ করা হয়। তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ধরা হয় জামশেদপুরের রামাধীরবাগানের রিঙ্কু, কাশিডির কৈলাসকে। ঝালদার স্বামীবিচ্ছিন্না ওই মহিলাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়ে-সহ টাটানগরে নিয়ে যায় সাহেবগঞ্জের মনু মণ্ডল। ধরা পড়ে সে-ও। ২৯ জুলাই রামাধীরবাগানে রিঙ্কুর দেখানো জায়গা থেকে মেলে শিশুটির ধড়। মাথা মেলেনি। পুলিশ সূত্রের দাবি, রিঙ্কুর বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগটি দায়ের হয় সাকচি থানায়। ২০০৮ সালে। অপহৃত সেই বালকের খোঁজ মেলেনি। ২০১৫-য় দশ বছরের এক শিশুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে রিঙ্কুর বিরুদ্ধে। এসএসপি (জামশেদপুর) অনুপ বীরথাড়ে জানান, ওই মামলায় তার পাঁচ বছরের জেল হয়। মাস ছয়েক আগে জামিন পায় রিঙ্কু। এ দিন টুইট করে অভিনেতা ফারহান আখতারের প্রশ্ন, গুরুতর মামলায় অভিযুক্ত রিঙ্কু জামিন পেল কী করে? টুইটে দোষীদের চূড়ান্ত শাস্তি দাবি করেন অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মাও। তবে এসএসপি (জামশেদপুর) বলেন, ‘‘জামিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত আদালতের। এ নিয়ে মন্তব্য করব না।’’
রিঙ্কুর মা গিরিডিতে রাজ্য পুলিশে চাকরি করেন। পুলিশের কাছে তাঁর দাবি, রিঙ্কুর ‘মানসিক বিকার’ রয়েছে। স্বামীর ‘কার্যকলাপে’ অতিষ্ঠ হয়ে তিন সন্তানকে নিয়ে রিঙ্কুর স্ত্রী কয়েক বছর আগে তাকে ছেড়ে চলে যান। পুলিশের দাবি, জেরায় কৈলাস বলেছে, রিঙ্কু প্ল্যাটফর্ম থেকে শিশুটিকে পরিত্যক্ত কারখানায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুন করে। কৈলাসও শিশু পাচার চক্রে জড়িত থাকতে পারে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। মনু মণ্ডল ওই দু’জনের সঙ্গেই যুক্ত, না তার আলাদা কোনও মতলব ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহত শিশুটির মা বা তাঁর পরিবারের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি।