জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ-এর সমাবেশে।—নিজস্ব চিত্র।
শান্তিপূর্ণ পথে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার ডাক দিল জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। জাতীয়তাবাদের মনোভাব বজায় রাখা এবং ধর্মীয় বিভাজনের বিরোধিতা করে প্রস্তাবও নেওয়া হল সংগঠনের সমাবেশে।
রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে রবিবার জমিয়তের সমাবেশে ভিড় হয়েছিল বিপুল। ভিড়ের চাপে বেশ কিছু ক্ষণ থমকে গিয়েছিল মধ্য কলকাতার রাস্তাঘাট। সমাবেশে সংখ্যালঘু পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। যা সচরাচর থাকে না। জমিয়তের নেতৃত্ব ছাড়াও সমাবেশের মঞ্চে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিলের এগ্জিকিউটিভ চেয়ারম্যান শ্যামল ঘটক, কাউন্সিলের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান প্রসূন দত্ত, শিবানন্দ মহারাজ, বেঙ্গল বুদ্ধিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের হেমেন্দু বিকাশ চৌধুরী প্রমুখ।
জমিয়তের রাজ্য সভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী সমাবেশে বলেন, ‘‘সম্প্রীতির অতীত আমাদের গর্ব। দেশের সংবিধান তৈরির সময় সে কথাই স্বীকৃতি পেয়েছিল। সংবিধান তৈরির সময় আরএসএস-বিজেপি ছিল না। জমিয়তে ছিল। আমরা আমাদের মতামত জানিয়েছিলাম।’’ এ দেশের মুসলিমদের বড় অংশই পাকিস্তান চাননি এবং পাকিস্তানে যেতে চাননি, সেই কথা উল্লেখ করে সিদ্দিকুল্লার বক্তব্য, ‘‘৫৬ ইঞ্চি সে কথা ভুলে ভেদাভেদ করতে চাইছে! এই মানুষের জমায়েত থেকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাংলা থেকেই বিদ্রোহের শুরু হবে। তবে সবাই শান্ত থাকবেন। নীতি-আদর্শের কথা মাথায় রাখবেন। শান্তিপূর্ণ পথে এগোলে এই আন্দোলন অনেক দূর যাবে।’’ সমাবেশে গৃহীত প্রস্তাবেও বলা হয়েছে, ‘আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে অঙ্গীকার এবং ঘোষণা করছি য়ে, সম্মিলিত জাতীয়তাবাদ নিয়ে আমরা বসবাস করছি এবং করব। এই প্রশ্নে মাতৃভূমির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা কখনও বরদাস্ত করব না’।
নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার এবং এনআরসি বাতিলের দাবিতে পথে নেমেছিল বামেরাও। হাওড়ায় তিনটি পৃথক প্রতিবাদে হাজির ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও দলের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। তিনটি জমায়েতেই ভিড় ছিল নজরে পড়ার মতো। সেলিম বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরা যে বিভাজন ঘটাতে চাইছেন, দেশের মানুষ তা মেনে নেবেন না।’’