রবিবারই কৃষ্ণনগরে লোকসভা ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া।
ঝড়ে বিধ্বস্ত জলপাইগুড়ির উদ্দেশে রবিবার রাতেই রওনা হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা থেকে বিমানে রওনা হয়েছেন তিনি। রাত সাড়ে দশটা নাগাদই বাগডোগরায় পৌঁছে যাওয়ার কথা তাঁর।
রবিবার বিকেলে জলপাইগুড়ি শহর, ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ির বেশ কিছু এলাকা ঝড়ে বিপর্যস্ত হয়। সেই ঝড়ে এলাকার ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি চার জনের মৃত্যুও হয়েছে বলে খবর। মমতা এই ঘটনার খবর পেয়ে আগেই প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে সন্ধ্যায় তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, মমতা রবিবার রাতেই জলপাইগুড়ির উদ্দেশে রওনা হবেন। সশরীরে উত্তরবঙ্গে পৌঁছে ঝড়ে বিধ্বস্ত জলপাইগুড়ির মানুষের পাশে দাঁড়াবেন তিনি।
রবিবারই কৃষ্ণনগরে লোকসভা ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে রবিবার সন্ধ্যায় ফিরেছিলেন কলকাতায়। তার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই জলপাইগুড়িতে ঝড়ের খবর আসে। মমতা প্রথমে এক্স (সাবেক টুইটারে) হ্যান্ডলে পোস্ট করে জানিয়েছিলেন, তিনি মৃতদের পরিবারের প্রতি সমব্যথী। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এ-ও জানান যে, নির্বাচনী আদর্শ বিধি অনুসরণ করেও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াবে সরকার।
আগে ঠিক ছিল সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে দেখা করবেন এই ঘটনায় আহতদের সঙ্গে । পরিদর্শন করবেন ঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকাগুলিও। কিন্তু পরে তৃণমূলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় রবিবার রাতেই জলপাইগুড়ির উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন মমতা। তাই অভিষেক জলপাইগুড়িতে যাচ্ছেন না।
সোমবার বিকাল ৫টায় শিলিগুড়িতে সভা ছিল অভিষেকের। তৃণমূলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, অভিষেকের সেই সভা করার পরিকল্পনা বদলাচ্ছে না। সোমবার তিনি যথাসময়েই সেখানে পৌঁছে যাবেন এবং সভা করবেন।
কিছু ক্ষণের ঝড়ে লন্ডভন্ড দশা হয় জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ অংশের। চার জনের মৃত্যুর পাশাপাশি অনেকে আহত হয়েছেন বলেও খবর।
রবিবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) মুখ্যমন্ত্রী মমতা লিখেছিলেন, ‘‘জেনে দুঃখ পেলাম যে হঠাৎ ভারী বৃষ্টিপাত এবং ঝোড়ো হাওয়ায় আজ বিকেলে জলপাইগুড়ি-ময়নাগুড়ি এলাকায় কিছু বিপর্যয় ঘটেছে। যার মধ্যে মানুষের প্রাণহানি, আহত হওয়া, বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি, গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যাওয়া ইত্যাদি রয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, জেলা এবং ব্লক প্রশাসন, পুলিশ, ডিএমজি এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ইতিমধ্যে উদ্ধারকাজ শুরু করে দিয়েছে। চলছে ত্রাণ সরবারহ। ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
সমাজমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী আরও লেখেন, ‘‘জেলা প্রশাসন নিয়মানুযায়ী এবং লোকসভা ভোটের আদর্শ আচরণ বিধি অনুসরণ করে নিহতদের পরিবার এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ দেবে।’’ মমতা লেখেন, ‘‘আমি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে আছি এবং আমি নিশ্চিত যে জেলা প্রশাসন উদ্ধার ও ত্রাণ প্রদানের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আহতদের দেখতে লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়ির তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায় জলপাইগুড়ি হাসপাতালে যান। তিনি জানান, দু’জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন। দ্রুত উদ্ধারকাজ চলছে।