প্রতীকী ছবি।
সম্ভবত এই প্রথম! বন্দিদের সঙ্গে এক মঞ্চে অভিনয় করলেন জেল সুপার। ঘটনাস্থল দমদম সেন্ট্রাল জেল।
বর্ষশেষ আর বর্ষবরণ, দুইয়ের মেলবন্ধনে ‘স্বাগতম’ উৎসবের আয়োজন করেছিলেন জেল-কর্তৃপক্ষ। সেই উৎসব মঙ্গলবার সাঙ্গ হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রক্তকরবী’ নাটকটি মঞ্চস্থ করার মধ্য দিয়ে। এ দিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দু’ঘণ্টা ১০ মিনিটের রক্তকরবীতে রাজার ভূমিকায় অভিনয় করেন দমদম জেলের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী। তাঁর সঙ্গেই মঞ্চে নন্দিনীর ভূমিকায় ছিলেন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিনী সোমাশ্রী। চন্দ্রার ভূমিকায় ছিলেন দণ্ডিত বন্দিনী জিনিয়া। বিশু পাগলের ভূমিকায় দমদম জেল চত্বরে হাততালি কুড়োন রায়গঞ্জের তুহিন রায়। জেলের অন্দরে ব্যান্ডও সামলান তিনি। বন্দি-বন্দিনীদের সঙ্গে ছিলেন কারাকর্মী টুম্পা মাহাতোও।
প্রায় তিন মাস ধরে ‘রক্তকরবী’র মহড়া দিয়েছিলেন সোমাশ্রী-জিনিয়া-তুহিন-শ্রীকৃষ্ণ-সোফিয়া-গিরিধারীরা। সেই সময় প্রতি মুহূর্তে তাঁদের উৎসাহ দিলেও মহড়া দিতে পারেননি দেবাশিসবাবু। মাত্র তিন দিনের মহড়াতেই সংলাপ ঠোঁটস্থ করেন তিনি। কিন্তু কেন বন্দি-বন্দিনীদের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করলেন জেল সুপার? দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘আমি মূলত প্রশাসক। তা সত্ত্বেও দেখতে চাই, সংশোধনকারী হিসেবে বন্দিদের সঙ্গে আমি কতটা স্বচ্ছন্দ। আমরা তো ‘কারেকশনাল সার্ভিস’ বা সংশোধন কাজের সঙ্গে যুক্ত। সংশোধক হিসেবে শুধু দূরে থাকলেই হয়তো সংশোধন প্রক্রিয়া সফল হবে না। তাই বন্দিদের সঙ্গে মিশেই সংশোধন করতে হবে।’’ বন্দিদের সঙ্গে কোনও জেলের সুপার নাটকে অভিনয় করছেন, এমনটা আগে সম্ভবত হয়নি বলেই জানাচ্ছেন কারাকর্তাদের অনেকে। এ দিন শুধু নাটক নয়। ছিল ভূরিভোজের আয়োজনও। বর্ষবরণ
উপলক্ষে মধ্যহ্নভোজে ছিল ডিম সহযোগে খিচুড়ি, বেগুন ভাজা, পায়েস, চাটনি।