—ফাইল চিত্র।
কয়েক দিন আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, শিক্ষাঙ্গনে ভাঙচুর নিন্দনীয়। যাদবপুরে ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক করা হবে’ বলে যে-মন্তব্য করা হয়েছে, তা-ও নিন্দাযোগ্য। কিন্তু সেপ্টেম্বরে যাদবপুরে বহিরাগতেরা যে-ভাঙচুর চালিয়েছিল, শুক্রবার সরাসরি তার নিন্দা করলেন না রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ঘুরিয়ে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা এবং ক্যাম্পাসে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তিনি তাঁর চিন্তার কথা জানালেন। প্রশ্ন তুললেন, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার জন্য ২০১৪ সালে কলকাতা হাইকোর্ট যে-অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছিল, তা মানা হয়নি কেন?
এ দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে রাজ্যপাল জানান, ক্যাম্পাসে শান্তির প্রশ্নে কোনও আপস নয়। ক্যাম্পাসের শান্তি বহিরাগতেরা নষ্ট করেছে বলেই খবর আছে তাঁর কাছে। ক্যাম্পাসের সুরক্ষার বিষয়ে ২০১৪ সালে হাইকোর্ট যে-নির্দেশ দিয়েছিল, তাতে ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা বসানো, পরিচয়পত্র চালু, মিটিং-মিছিলের জন্য জায়গা
নির্দিষ্ট করা, প্রবেশদ্বারে পুলিশ পোস্টিংয়ের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছিল। ধনখড়ের প্রশ্ন, সেই সব ব্যবস্থা হয়নি কেন?
যাদবপুরে পড়ুয়াদের এক দল প্রতিনিধির সঙ্গেও এ দিন কথা বলেন রাজ্যপাল। প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাসে এবিভিপি-র তাণ্ডবের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। ওই প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য অভীক দাস জানান, রাজ্যপাল এই বিষয়ে প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি। রাজ্যপাল জানান, যাদবপুরের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য সকলে মিলে উদ্যোগী হতে হবে। তিনি ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, প্রাক্তনী, প্রাক্তন উপাচার্য-সহ সকলকেই আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। আলোচনার মাধ্যমে একটি পরিকল্পনা করা দরকার বলে জানান রাজ্যপাল।
১৯ সেপ্টেম্বর যাদবপুরে ছাত্র-বিক্ষোভের মুখে পড়েন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। শেষ পর্যন্ত রাজ্যপাল গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। তাঁর গাড়িও দীর্ঘ ক্ষণ আটকে রাখেন পড়ুয়ারা। রাজ্যপাল এ দিন পড়ুয়া-প্রতিনিধিদের জানান, তিনি কোনও পক্ষের নন। পড়ুয়ারা যেন আগে থেকেই তাঁকে কোনও পক্ষের ভেবে না-বসেন। তাঁদের রাজভবনে যেতে বলেছেন রাজ্যপাল। জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া নিয়ে রাজ্যপালের মতামত জানতে চান পড়ুয়ারা। এনআরসি প্রসঙ্গও তোলেন তাঁরা। অভীক জানান, রাজ্যপাল তাঁদের কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দেননি। তিনি লিখিত ভাবে প্রশ্ন করতে বলেছেন। ‘‘উনি এ দিন ক্যাম্পাসে এসে অনেক কিছুই বলেছেন। কিন্তু তাঁর ছাত্র-দরদের কোনও প্রমাণ আমরা পেলাম না,’’ বলেন অভীক।