শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।—ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ‘জোর খাটালে’ কোনও বিষয়েই আলোচনা করা যাবে না বলে জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কথা বলতে চেয়ে রাজ্যপাল যে চিঠি দিয়েছিলেন, তার জবাবে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। সেই সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী আরও লিখেছেন, রাজ্য সরকার প্রস্তুত। কিন্তু আলোচনার জন্য আগ্রহে রাজ্যপালের ‘আন্তরিকতা’ থাকতে হবে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে ঢুকতে না পেরে শিক্ষা সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা চেয়ে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল ধনখড়। সেই চিঠির যে জবাব মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন, তা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করে দেন রাজ্যপাল। তার পরেই যাদবপুর সম্পর্কে সরকারের মত জানিয়ে রাজ্যপালকে একটি চিঠি পাঠিয়ে শিক্ষামন্ত্রী সেটিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। ওই চিঠিতে রাজ্যপালকে ‘খোঁচা’ দিয়েই শিক্ষামন্ত্রী লিখেছেন, ‘রাজ্য সরকার যে কোনও বিষয়ে আলোচনার জন্য তৈরি। তবে তাতে রাজ্যপালের আগ্রহে আন্তরিকতা থাকতে হবে। জোরাজুরি করলে চলবে না’।
রাজ্যপালকে জবাব দিয়ে দু’দিন দিয়ে দু’দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী যথাসময়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করবেন। মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো সেই জবাবি-চিঠি সামাজিক মাধ্যমে দিয়েছিলেন ধনখড়। তার পরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা সম্পর্কে শিক্ষা দফতরের বক্তব্য জানিয়ে শনিবার রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে তা-ও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন পার্থবাবু। শুধু তা-ই নয়, কার্যত ছাত্রদের পক্ষে দাঁড়িয়েই যাদবপুরের ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের কারণ হিসেবে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি-র প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। সমাবর্তনের দিন সরকার নিস্পৃহ ছিল বলে রাজ্যপাল যে অভিযোগ করেছিলেন, এই চিঠিতে তা খারিজ করে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, সে দিন যা ঘটেছে, তা ছাত্রদের আন্দোলনের ফল। শিক্ষা দফতর স্বশাসিত সংস্থায় হস্তক্ষেপ করে না।
শিক্ষামন্ত্রীর জবাবের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার ফের টুইট করে রাজ্যপাল বলেছেন, ‘আমি কৌতুক বোধ করছি। তবে এটা ইঁটের বদলে পাটকেল মারার সময় নয়। আশা করি, মুখ্যমন্ত্রীর কথামতো আমরা আলোচনার মাধ্যমে কাজ করতে পারব।’ ফের টুইট করে এ দিনই রাজ্যপালকে এই টুইটের জবাব দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেছন, ‘ইঁট-পাটকেলের শিক্ষা আমার নেই। রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি সামাজিক মাধ্যমে দেওয়ায় শিক্ষা দফতরের বক্তব্যও প্রকাশ করেছি।’
নতুন করে শুরু এই টুইট-যুদ্ধে সরকার ও রাজ্যপালের কাজের পথ কতটা সহজ হবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।