রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কঠোর নিন্দা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ছবি: পিটিআই।
বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লর হত্যা ঘিরে তুঙ্গে পৌঁছনোর পথে রাজনৈতিক টানাপড়েন। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কঠোর নিন্দা করে রবিবার রাতেই টুইট করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে তিনি তলব করলেন রাজভবনে। মনীশের হত্যাকে ‘কাপুরুষোচিত’ বলেও তিনি আখ্যা দিয়েছেন।
রাত ১১টা ৪০ নাগাদ টুইট করেছেন রাজ্যপাল। সোমবার সকাল ১০টায় তিনি রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে রাজভবনে তলব করেছেন বলে টুইটে রাজ্যপাল জানিয়েছেন।
মনীশের হত্যাকে রাজ্যপাল ‘কাপুরুষোচিত হত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতির কারণেই এই হত্যা হয়েছে বলে রাজ্যপাল মনে করছেন। তার প্রেক্ষিতেই যে স্বরাষ্ট্রসচিব এবং ডিজি-কে তিনি তলব করেছেন, তাও রাজ্যপাল স্পষ্ট ভাবেই জানিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং ডিজি বীরেন্দ্র সোমবার রাজভবনে যাবেন কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি। তবে মণীশ-হত্যাকে কেন্দ্র করে রাজভবন-নবান্ন সঙ্ঘাত যে আবার নতুন মাত্রায় পৌঁছতে পারে, তার আভাস রবিবার রাতেই মিলছে।
আরও পড়ুন: ব্যারাকপুরের বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লকে গুলি করে খুন
আরও পড়ুন: ভুয়ো মেলের ফাঁদে খোদ রাজ্যপাল! অভিযোগ জানালেন কলকাতা পুলিশকে
রবিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড়ে খুন হয়েছেন বিজেপি নেতা তথা বিদায়ী কাউন্সিলর মণীশ। তাঁর উপর হামলার খবর ছড়ানো মাত্রই রাজনৈতিক শিবিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং অরবিন্দ মেনন থেকে শুরু করে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ— প্রত্যেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে শুরু করেন। আর যাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে মণীশ পরিচিত ছিলেন, ব্যারাকপুরের সেই সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপি-র সহ-সভাপতি অর্জুন সিংহ প্রকাশ্যেই হুমকির সুর শুনিয়ে দেন। টুইটারে মণীশকে নিজের ‘ভাই’ সম্বোধন করে অর্জুন লেখেন, ‘‘এই কুকর্মের ফল তৃণমূলকে, তৃণমূলের নেতাকে এবং পুলিশকে এখানেই পেতে হবে।’’
তৃণমূলও পাল্টা বয়ান দিয়েছে। জেলা তৃণমূলের সামনের সারির নেতা তথা শিল্পাঞ্চলেরই বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেছেন, ‘‘তৃণমূলকে বদনাম করা বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের একমাত্র কাজ। তাই মণীশ হত্যার দায় অর্জুন তৃণমূলের উপরে চাপাতে চাইছেন।’’ মণীশ বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুন হয়েছেন বলে নির্মলের দাবি। কিন্তু শুধু নেতাদের বয়ান পাল্টা বয়ানের মধ্যে উত্তেজনা সীমাবদ্ধ থাকেনি। যেখানে মনীশের উপরে গুলি চলেছিল, সেই টিটাগড়ে বিজেপি কর্মীরা বড় সংখ্যায় রাস্তায় নামেন। থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিটি রোড অবরোধও করা হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত বিরাট বাহিনী নামায় ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। কিন্তু পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তিনি যে অত্যন্ত অখুশি, তা রাজ্যপাল রাতেই বুঝিয়ে দিয়েছেন।