দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে দিল্লিতে তলব করলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা। দলের এক সূত্রের দাবি, নড্ডা দিলীপবাবুকে আজ, শুক্রবার দিল্লিতে তাঁর সঙ্গে দেখা করার নির্দেশ দিয়েছেন। দিলীপবাবুকে বিতর্কিত ভাষা ব্যবহারে বিরত করাই এই তলবের উদ্দেশ্য। পাশাপাশি, দিলীপবাবু এবং তাঁর শিবির সম্পর্কে সম্প্রতি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে যে সব অভিযোগ গিয়েছে, সে সবও আলোচনায় উঠে আসতে পারে বলে দলের একটি সূত্রের দাবি। দিলীপবাবু নিজে অবশ্য বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘আমিই নড্ডাজির সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। উনি যেতে বলেছেন। তবে কবে যাব, তা এখনও ঠিক হয়নি।’’ নড্ডা কি তাঁকে ভাষা প্রয়োগ সম্পর্কে হুঁশিয়ারি দিতে ডেকেছেন? দিলীপবাবুর দাবি, তা তাঁর জানা নেই।
সম্প্রতি বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রাজনৈতিক মহলে চর্চার বিষয় হয়। এমনকি, দিলীপবাবু রাজ্য সভাপতির পদ ছাড়তে চান বলেও গুঞ্জন শুরু হয়। যদিও দিলীপবাবু-সহ বিজেপির সব নেতাই দাবি করেন, দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই নেই। বিজেপির রাজ্য দফতরে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে দিলীপবাবুকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি সত্যিই রাজ্য সভাপতি পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ যদি পদত্যাগ করতে চাইত, তা হলে এত দিন পদে থাকত না! আমি বুকে পা দিয়ে রাজনীতি করতে এসেছি। যে সামনে আসবে, তার বুকে পা দিয়ে রাজনীতি করব! বাংলার পরিবর্তন দিলীপ ঘোষ একা করতে পারবে! কারও যদি আত্মবিশ্বাস, বিশ্বাস না থাকে, বাড়িতে বসে থাকুক! আমাদের মুখ্যমন্ত্রী হলে ওরা যেন মিষ্টি খেতে আসে।’’ বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, দিলীপবাবুর ওই মন্তব্যের ভিডিয়ো ক্লিপ সে দিনই পৌঁছে দেওয়া হয় নড্ডা এবং আরএসএস নেতাদের কাছে। ওই মন্তব্য একটি দলের রাজ্য সভাপতির মুখে শোভন কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয় দলেরই অন্দরে। তবে প্রকাশ্যে বিজেপির কোনও নেতাই এ নিয়ে মুখ খোলেননি। দলের একটি সূত্রের মতে, দিলীপবাবুকে ওই ধরনের ভাষা প্রয়োগ বন্ধ করার নির্দেশ দিতেই নড্ডা তাঁকে দিল্লিতে ডেকেছেন। প্রসঙ্গত, দিলীপবাবুর বিতর্কিত ভাষা বহুচর্চিত। এ বিষয়ে তাঁকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আগেও সতর্ক করেছেন। কিন্তু তাতে তাঁর ভাষা বদলায়নি।
বুকে পা দিয়ে রাজনীতি করার কথা বলার প্রেক্ষিতেই কি নড্ডা তাঁকে ডেকেছেন? দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমি জানি না। আমাকে তো উনি বলেননি!’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘জুলাই মাসে দলের বৈঠকের জন্য যখন কয়েক দিন দিল্লিতে ছিলাম, তখনই আমি নড্ডাজির সময় চেয়েছিলাম। আমার যে দিন দুপুরে কলকাতা ফেরার টিকিট ছিল, সে দিন সন্ধ্যাবেলা তিনি সময় দেন। কিন্তু পর দিন পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন থাকায় আমি সে দিন থাকতে পারিনি। সে কথা ওঁকে জানিয়েছিলাম। গত ৭ অগস্ট আবার ওঁকে দেখা করার ইচ্ছে জানাই। তার পর উনি দিল্লিতে ডেকেছেন।’’ এ বার দিল্লি গেলে আগের বার বাকি থাকা জেলাগুলির সঙ্গেও বিধানসভা ভোট প্রস্তুতির বৈঠক সারতে চান বলে জানিয়েছেন দিলীপবাবু। অন্য দিকে, বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ জানান, রাজ্যে ‘গণতন্ত্র ফেরানোর’ দাবিতে আগামী রবিবার বুথভিত্তিত ধর্না দেবেন বিজেপি কর্মীরা।
আরও পড়ুন: দিলীপবাবুকে বিতর্কিত ভাষা ব্যবহারে বিরত করাই এই তলবের উদ্দেশ্য।