অফিস ফেঁদে কিডনি বিক্রি চক্র মহিলার, বিশ্বাসই হচ্ছে না জগাছার প্রতিবেশীদের

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৭ সালে দহিওলা থানা এলাকার এক হাসপাতাল থেকে কিডনি পাচারের অভিযোগে এক মহিলা চিকিৎসক-সহ তিন চিকিৎসক এবং আরও তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল উত্তরাখণ্ড পুলিশ। ওই ঘটনার তদন্তে চন্দনার নাম উঠে আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০১:১৪
Share:

চন্দনা গুড়িয়া

আপাতদৃষ্টিতে দেখলে একটি সাধারণ দোতলা বাড়ি। স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে সেখানে থাকতেন এক মহিলা। পাড়ার লোকজন জানতেন, তিনি চিকিৎসা সংক্রান্ত পেশায় যুক্ত। লোকজনেরও আনাগোনা ছিল বাড়িটিতে। গভীর রাতে পুলিশ আসতে দেখে তাই একটু অবাকই হয়েছিলেন বাসিন্দারা। ওই মহিলাকে পুলিশ গ্রেফতার করার পরে তাঁরা জানতে পারলেন, বাড়ির মধ্যে রীতিমতো অফিস খুলে বসে চলছিল কিডনি বিক্রির চক্র!

Advertisement

এমনই অভিযোগে শনিবার হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও উত্তরাখণ্ড পুলিশের একটি দল যৌথ অভিযান চালিয়ে জগাছার মহিয়াড়ি রোডে জিআইপি কলোনির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে চন্দনা গুড়িয়া নামে ওই মহিলাকে। রবিবার আদালতে তোলা হলে তাঁকে ট্রানজিট রিমান্ডে উত্তরাখণ্ডের দহিওলা থানায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। ১০ অক্টোবর ফের অভিযুক্তকে হাওড়া আদালতে হাজির করা হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৭ সালে দহিওলা থানা এলাকার এক হাসপাতাল থেকে কিডনি পাচারের অভিযোগে এক মহিলা চিকিৎসক-সহ তিন চিকিৎসক এবং আরও তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল উত্তরাখণ্ড পুলিশ। ওই ঘটনার তদন্তে চন্দনার নাম উঠে আসে। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে হরিদ্বারে নিয়ে গিয়ে দু’জনের কিডনি বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। এর পরেই দহিওলা থানার একটি দল চন্দনাকে ধরার জন্য হাওড়া সিটি পুলিশের সাহায্য চায়। সেই মতো শনিবার রাতে চন্দনার বা়ড়িতে হানা দেয় পুলিশ।

Advertisement

রবিবার সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, যে বাড়ির নীচে স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে চন্দনা থাকতেন, সেখানে ভিড় করেছেন এলাকাবাসী। তাঁরাই জানালেন, বছর পঁয়তাল্লিশের ওই মহিলা সপরিবার পাশের পাড়ায় থাকতেন। দু’বছর আগে জিআইপি কলোনিতে ভাড়া আসেন। বাসিন্দাদের বক্তব্য, তাঁরা জানতেন, চিকিৎসা সংক্রান্ত পেশায় যুক্ত আছেন চন্দনা। বাড়িতেই ‘ওয়েলনেস সেন্টার’ নামে একটি অফিস খুলেছিলেন তিনি। বেশ কিছু লোকের যাতায়াত ছিল সেখানে।

এক বাসিন্দা রাজেশ বেরা বলেন, ‘‘আগে ওই মহিলার আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। কিন্তু হঠাৎই সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। আমাদের বলতেন, মেডিক্যাল লাইনে কাজ করেন। কিন্তু তিনি যে কিডনি পাচারের সঙ্গে জড়িত, ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, চন্দনার স্বামী ও মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই চক্রে তাঁর সঙ্গে আর কে বা কারা জড়িত, সেই খোঁজখবরও চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement