প্রতীকী ছবি।
শ্রেণিকক্ষে ক্লাসের প্রশ্নে শিক্ষক-পড়ুয়া তরজার পরে বৃহস্পতিবার ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্লাস পুরোপুরি অফলাইনেই হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার ওই ফ্যাকাল্টিতে অফলাইনেই ক্লাস হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। সহ-উপাচার্য স্যমন্তক দাস জানান, এ দিন ক্যাম্পাসে ঠিকঠাক ক্লাস হয়েছে।
মঙ্গলবার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র সংসদ (ফেটসু) অভিযোগ করে, শিক্ষকদের একাংশ অফলাইন ক্লাস না-নিয়ে অনলাইনে ক্লাস করার লিঙ্ক পাঠাচ্ছেন। এই অভিযোগে উপাচার্য, সহ-উপাচার্যের দফতরের সামনে বিক্ষোভও দেখায় ফেটসু। শিক্ষকদের বক্তব্য ছিল, ছাত্রদের একাংশের অনুরোধেই তাঁরা কিছু ক্ষেত্রে অনলাইনে ক্লাস নিয়েছিলেন। কারণ, বঙ্গ এবং বাইরের পড়ুয়ারা এসে হস্টেল বা অন্যত্র থাকার বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন। তার পরে ক্যাম্পাসে ক্লাস। এতে সময় লাগবে। বিভাগীয় শিক্ষক-ছাত্র কমিটিগুলিতে আলোচনার ভিত্তিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। চলতি সপ্তাহ পর্যন্ত অফলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রে তাই হাজিরা নিয়ে কড়াকড়িও করেননি শিক্ষকেরা।
শিক্ষকদের বক্তব্য ছিল, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের অনেক ক্লাসে গিয়ে তাঁরা দেখেছেন, কোনও পড়ুয়াই নেই। তাঁরা ক্লাস না-নিয়ে ফিরে এসেছেন। এ বিষয়ে যিনি প্রথম উপাচার্যকে চিঠি দেন, তরুণকান্তি নস্কর (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষক সংগঠন আবুটার সহ-সভাপতি) শুক্রবার বলেন, ‘‘ক্যাম্পাস খোলাই হয়েছে অফলাইন ক্লাসের জন্য। আমরাও তার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে যে-অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা প্রত্যাশিত নয়। আমরা চিন্তিত, এর ফলে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক বিঘ্নিত হতে পারে।’’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বিচ্ছিন্ন ভাবে কয়েকজন শিক্ষক অনলাইনে পড়ানোর ব্যাপারে আগ্রহ দেখালেও সংখ্যাটা বড় নয়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা)-র তরফে বৃহস্পতিবার উপাচার্যকে দেওয়া স্মারকলিপিতেও দূরের পড়ুয়াদের অনুরোধে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার উল্লেখ রয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়াদের একাংশের অফলাইন ক্লাসে অনীহার কথাও জানানো হয়। শিক্ষকেরা যে কোনও কোনও ছাত্র-নেতার ব্যবহারে অপমানিত, উল্লেখ করা হয় তা-ও।
জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘বিভিন্ন বিভাগে পড়ুয়ারাই ই-মেল করে জানাচ্ছেন, তাঁদের অনুরোধে শিক্ষকেরা অনলাইন ক্লাস নিচ্ছেন।’’
ফেটসু-র সভাপতি অরিত্র মজুমদারের বক্তব্য, সব বর্ষ নয়, তাঁরা প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ক্লাস নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। যদিও প্রথম দিন ফেটসু-র অভিযোগে নির্দিষ্ট বর্ষের উল্লেখ ছিল না। অরিত্রের দাবি, কোন কোন শিক্ষক ক্লাস নেননি, সেই তালিকা তাঁদের কাছে আছে।
এমনও অভিযোগ উঠেছে, ল্যাবরেটরিতে শিক্ষক ক্লাস নেবেন বলে অপেক্ষা করেছেন, অথচ পড়ুয়ারা কেউ যাননি। ছাত্রদের দাবি, ল্যাবরেটরি কোন দিকে জানেন না বলে তাঁরা যেতে পারেননি! অরিত্রের যুক্তি, প্রথম বা দ্বিতীয় কোনও বর্ষেরই ‘ওরিয়েন্টেশন’ হয়নি। তাই ওই দুই বর্ষের পড়ুয়ারা এখনও ভাল করে ক্যাম্পাস চিনে উঠতে পারেননি।