ধর্মতলার সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি
বিজেপির লোক নেই, তাই কনভয়ে হামলার নাটক করছে। ডায়মন্ড হারবারের পথে জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলা নিয়ে এই মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর। কৃষি বিলের প্রতিবাদে মেয়ো রোডের জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘একটা কনভয়ে ৪০টা গাড়ি কেন থাকবে।’’ ডায়মন্ড হারবারের সভা থেকে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডা। ধর্মতলার সভা থেকে তার জবাবও দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার পথে হামলার মুখে পড়ে নড্ডা-সহ বিজেপি নেতাদের কনভয়। একের পর এক গাড়িতে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। অনেকগুলি গাড়ির কাচ ভেঙে যায় তাতে। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূলের দিকে। কিন্তু তাঁর দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ করে মমতা পাল্টা বলেন, ‘‘ওঁদের লোক নেই। কনভয়ে হামলার নাটক করে ন্যাশনাল নিউজে দেখাচ্ছে।’’
কনভয়ের নিরাপত্তার দায় কেন্দ্রের ঘাড়ে ঢেলে মমতা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘ওঁরা তো কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে আসেন। সিবিআই-ইডি রাজ্যে অভিযান চালায়। আমাদের কিছু জানানো হয় না। আর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলেই তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপানো হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আপনারা তো কেন্দ্রের নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে আসেন। তা হলে হামলা হল কী করে?’’ তিনি নিজেও দিল্লি গিয়ে বিজেপির বাধার মুখে পড়েন বলে অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, ‘‘আমি যখনই দিল্লি যাই, বিজেপির লোকেরা আমি যেখানে থাকি, তার চারপাশে ঘিরে রাখে। সম্মান পেতে গেলে সম্মান দিতে জানতে হয়।’’
কনভয়ে হামলা নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। রাজ্য পুলিশ টুইট করে জানিয়েছে, জেপি নড্ডার কনভয়ে কিছু হয়নি, পিছনের দিকের দু’-একটা গাড়িতে কিছু ইট-পাথর পড়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীও কার্যত পুলিশের বক্তব্যেই সায় দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, শিরাকোলে তৃণমূলের সভা থেকে হামলা চালানো হয়েছিল। সেই অভিযোগ উড়িয়ে মমতা বলেন, ‘‘শিরাকোলে আমাদের একটা সভা ছিল। কিন্তু সেই সভার সময় বদলে পরে করা হয়েছিল। ওখানে কিছু হয়নি। কোথায় কী হয়েছে আমি জানি না। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।’’
বৃহস্পতিবারই ডায়মন্ড হারবারের সভায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। আমপানের টাকায় দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছেন তিনি। তার জবাবে এ দিন মমতা বলেন, ‘‘আমি শুনেছি, উনি আজকেও বলেছেন, কেন্দ্র চাল দেয় আর তৃণমূল খেয়ে নেয়। একটা টাকা দিয়েছ, যে কৈফিয়ত চাইছ? আমাদের রাজ্য থেকে জিএসটি-র যে টাকা নিয়ে যাও, সেই টাকা আগে ফেরত দাও।’’
ধর্মতলার সভা থেকে কৃষি আইনের বিরুদ্ধেও কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে ২৬ দিন অনশন করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সেই আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘আমি নিজে ২৬ দিন অনশন করেছি। বামেদের অনেক অত্যাচার সহ্য করেও আন্দোলন থেকে সরে আসিনি। এই কৃষকদের আন্দোলন থেকেও সরব না। শেষ দেখে ছাড়ব। কেন্দ্রকে কৃষি আইন প্রত্যাহার করতেই হবে।’’
আরও পড়ুন: নড্ডার কনভয়ে হামলা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কেন্দ্র, জানালেন শাহ
আরও পড়ুন: ‘গুন্ডারাজ’ চলছে, মমতাকে ছুটি দিন, তোপ নড্ডার, পাল্টা তোপ তৃণমূলেরও