কী ভাবে মৃত্যু, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চায় পরিবার

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আড়শা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৪৪
Share:

গান স্যালুট দিয়ে শেষ বিদায় বিশ্বরূপকে। ছবি: সুজিত মাহাতো

সহকর্মীর গুলিতেই কি মৃত্যু হয়েছে বিশ্বরূপ মাহাতোর? ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের (আইটিবিপি) ওই জওয়ানের দেহ শুক্রবার বাড়িতে পৌঁছানোর পরে এই প্রশ্নটাই তুললেন নিহতের পরিবার। সেই সঙ্গে দাবি তুললেন পূর্ণাঙ্গ তদন্তের।

Advertisement

বিশ্বরূপের বাবা ভীমচন্দ্র মণ্ডলের কথায়, ‘‘ছেলের মৃত্যু-সংবাদ পাই আড়শা থানার পুলিশের কাছ থেকে। অথচ কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে আমাদের ছত্তীসগঢ়ের ওই রক্ষী শিবির থেকে কিছুই জানানো হয়নি। আমরা মৃত্যুর কারণ জানতে চাই।’’ একই দাবি তুলেছেন বিশ্বরূপের বড়দা আশিস মাহাতোও। এ দিন ওই পরিবারকে সমবেদনা জানাতে আড়শার খুকড়ামুড়া গ্রামে গিয়ে পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো আশ্বাস দিয়েছেন, যথাযথ তদন্তের জন্য তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দেবেন। সাংসদ বলেন, ‘‘ওই ঘটনার তদন্ত করবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তদন্ত যাতে যথাযথ ভাবে হয়, সে জন্য আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দেব।’’

সাংসদ গ্রাম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই বান্দোয়ানের সাংসদ রাজীবলোচন সোরেনকে নিয়ে সেখানে যান রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তিনি সেখানে গিয়েছেন। পরিবারটির পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি।

Advertisement

বুধবার সকালে ছত্তীসগঢ়ের নারায়ণপুর জেলার কাদেনার ক্যাম্পে এক সহকর্মীর ছোড়া এলোপাথাড়ি গুলিতে আরও কয়েজন জওয়ানের সঙ্গে বিশ্বরূপের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় নিহত আর এক জওয়ান পূর্বস্থলীর সুরজিৎ সরকারের জামাইবাবু বৃহস্পতিবার দাবি করেন, নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ে নয়, মাওবাদী হামলাতেই জওয়ানেরা হতাহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে বিশ্বরূপদের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে পরিজনদের মনে।

এ দিন সকালে রাঁচী থেকে সড়কপথে বিশ্বরূপের কফিনবন্দি দেহ বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যান ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের ৪০ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কমান্ডান্ট রবীন্দ্র কুমার। তাঁর কাছেও ঘটনার কারণ জানতে চেয়েছিলেন বিশ্বরূপের পরিজনেরা। তিনি শুধু বলেন, ‘‘ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

আগেই বিশ্বরূপের বড়দা জানিয়েছিলেন, তাঁর ভাই শান্ত স্বভাবের। কারও সঙ্গে ঝুটঝামেলায় জড়াতেন না। এ দিন তাঁরা দাবি করেন, ঘটনার সময়ে বিশ্বরূপ ‘ডিউটি’তে ছিলেন না। শিবিরেই কোনও একটি ঘরে ছিলেন। তাহলে কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হল?

ভীমচন্দ্রবাবু এ দিনও বলছিলেন, ‘‘ঘটনার আগের দিনই মঙ্গলবার রাতে অনেকক্ষণ ধরে ছেলের সঙ্গে ফোনে আমাদের কথা হয়েছিল। কর্মস্থলে সহকর্মীদের সঙ্গে কোনও সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে জানায়নি। তাহলে কী এমন ঘটল?’’

তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাড়িতে যেন ভিড় ভেঙে পড়েছিল। দেহ আনার পরে গান স্যালুট দিয়ে শেষ বিদায় জানান জওয়ানেরা। পরে শ্মশানে সৎকার করা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement