শোভন চট্টোপাধ্যায় ও দুলাল দাস। নিজস্ব চিত্র।
জামাইষষ্ঠীতেই শ্বশুরের বোধোদয়! ‘‘শোভনের মতো জামাই না হলেই ভাল হত,’’— আফসোস করে এখন এমনটাই বলছেন দুলাল দাস। এক সময় জামাইষষ্ঠীতে দুলালের বাড়িতে শোভনকে আপ্যায়নের দেখানো হত প্রায় সব বৈদ্যুতিন মাধ্যমে। কিন্তু বর্তমানে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে দুলাল-কন্যা রত্নার। পর্ণশ্রীর গোপাল মাস্টার লেনের বাড়ি ছেড়ে গত সাড়ে তিন বছর ধরে শোভন থাকেন গোলপার্কের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে। বান্ধবী বৈশাখীকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে রয়েছেন তিনি। সম্প্রতি ওই ফ্ল্যাট ছেড়ে দিতে হবে বলে চিঠি দিয়েছে রত্নার পরিবার। অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলেও শোভনকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।এমন পরিস্থিতিতে মহেশতলার দাসবাড়িতে আর হয় না জামাইষষ্ঠী।
জামাইয়ের এমন ব্যবহারে বেজায় বিরক্ত দুলাল।তিনি বলছেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে তো আমার মেয়ের বিয়েই দিতেই চাইনি। ও ওর ভাইদের নিয়ে এসে জোর করে হাত পা ধরে রাজি করায়। সেই সময় আমি কলকাতায় একজনের বাড়িতে ছিলাম। সেই বাড়িতে গিয়ে চার ভাই মিলে আমাকে বলে, আপনার মেয়েকে বিয়ে দিতে হবে। আমরা ওকে ঘরের মেয়ের মতো মনে করে নিয়েছি। সেই সময় অনেক কাকুতিমিনতি করে আমাকে রাজি করিয়েছিল। এখন মনে হয়, ওঁর মতো জামাই না হলেই ভাল হত।’’
শোভন-রত্নার সঙ্ঘাতে দুলাল বরাবরই মেয়ের পাশে থাকেন। প্রকাশ্যেই তীব্র সমালোচনা করেছেন শোভন-বৈশাখীর। মেয়ের আইনি লড়াই থেকে ভোটযুদ্ধ— সবেতেই সক্রিয় ভুমিকা ছিল তাঁর।সম্প্রতি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুকে একটি পোস্ট করা ভিডিও-তে শোভন দাবি করেছেন, তাঁর জন্য রাজনীতিতে আসতে পেরেছিলেন দুলাল। সঙ্গে মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন তাঁরই দৌলতে। জামাইয়ের এমন দাবি প্রসঙ্গেও কড়া জবাব দিয়েছেন মহেশতলার বিধায়ক। তিনি বলেছেন, ‘‘শোভন বলেছে আমি নাকি ওঁর হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছি। আমি রাজনীতিতে এসেছি, ১৯৬৮ সালে। আর শোভনের জন্ম কত সালে, সেটা ওকে দেখতে বলুন। আমার মেয়ের সঙ্গে ওর বিয়ে হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। আর আমি প্রথম নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি ১৯৮৬ সালে। আমার বক্তব্যের সব প্রমাণ আমার কাছে আছে।’’