মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। ইসলামপুর স্টেট ফার্ম কলোনি হাইস্কুলে। ছবি: অভিজিৎ পাল
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি। তবু উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরে দু’টি স্কুল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের তল্লাশিতে মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থা করেছে প্রথম দিন থেকেই। স্কুল দু’টির তরফে জানানো হয়েছে, পর্ষদ যে মোবাইল ফোন আটকানোর উপরে জোর দিয়েছে, মূলত সে জন্য এই ব্যবস্থা। যদিও এর ফলে পড়ুয়াদের অনেকেই বেশ কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছে বলে অভিভাবকদের একাংশ জানিয়েছে।
পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা বিশ্বাসের উপরে ভর করে তল্লাশি করার কথা বলেছি। মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশির নির্দেশ আমরা দিইনি।’’
মঙ্গলবার থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। গত বছর সাত দিনই পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগে প্রশ্নপত্রের প্রতিলিপি বাইরে চলে এসেছিল। এ বার তা আটকাতে রাজ্যের কিছু ব্লকে পরীক্ষার সময়ে নেট বন্ধ রাখা হচ্ছে। স্পর্শকাতর স্কুলগুলিতে পুলিশ, সিভিকের পাহারা চলছে। পড়ুয়াদের তল্লাশি করে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকানোরও ব্যবস্থা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশেষ দিনে নয়, ভাষার চর্চা চলতে থাকুক রোজ
খালি হাতে তল্লাশির কাজ অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই করছেন। কিন্তু ইসলামপুর স্টেট ফার্ম কলোনি হাইস্কুল ও শ্রীকৃষ্ণপুর হাইস্কুলে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পড়ুয়াদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। কোথাও তা করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা, কোথাও আবার পুলিশ।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ যেখানে এই ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করেনি, সেখানে স্কুল দু’টি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এমন ব্যবস্থা করল কেন? ইসলামপুর স্টেট ফার্ম কলোনি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন সরকার বলেন, ‘‘বোর্ডের নির্দেশ রয়েছে, কোনও ভাবেই যেন মোবাইল ফোন, স্মার্ট ঘড়ি নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় বসতে না-পারে। জনে জনে দেখে স্কুলে ঢোকাতে যাওয়া সময়সাপেক্ষ। ছেলেমেয়েদের গায়ে হাত দিয়ে মোবাইল খোঁজাও দৃষ্টিকটূ।’’ শ্রীকৃষ্ণপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফোন ধরেননি। তবে শিক্ষকদের একাংশ জানান, মোবাইল রুখতেই এই পদক্ষেপ।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নিযুক্ত উত্তর দিনাজপুর জেলা আহ্বায়ক ব্যোমকেশ বর্মণের দাবি, ‘‘জেলার ১৮টি পরীক্ষাকেন্দ্র স্পর্শকাতর। তার মধ্যে ১৬টি ইসলামপুর মহকুমায়। এখনও পর্যন্ত শুধু স্টেট ফার্ম হাইস্কুলে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পড়ুয়াদের পরীক্ষা করেছে।’’ উত্তর দিনাজপুর জেলার স্কুল পরিদর্শক নিতাই বিশ্বাস বলেন, ‘‘উপরমহল থেকে নির্দেশ নিয়েই কয়েকটি স্কুলে মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হচ্ছে।’’