মন্দির চত্বরে হনুমানদের ভুরিভোজ। নিজস্ব চিত্র
বিধানসভার আসন্ন উপনির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে দলকে অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিজেপিরই একাংশ। রাজ্য বিজেপির অন্দরে চর্চা হচ্ছে— ওই সব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে না পারলে উপনির্বাচনে বেগ পেতে হবে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য প্রকাশ্যে বলছেন, ‘‘এনআরসি নিয়ে বিরোধীরা যত প্রচার করবে, তত আমাদের লাভ হবে। আমরা পাল্টা প্রশ্ন তুলব, এত দিন ক্ষমতায় থেকেও কংগ্রেস, বাম, তৃণমূল কেউ উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেয়নি কেন? আমরা এনআরসি-র বদলে প্রচার করব নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে।’’
লোকসভা ভোটে ১৮টা আসন জয়ের পর আগামী ২৫ নভেম্বরের উপনির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী বিজেপি। ওই দিন করিমপুর, কালিয়াগঞ্জ এবং খড়্গপুর (সদর)-এ উপনির্বাচন। দলীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, ওই তিন বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে করিমপুর এবং কালিয়াগঞ্জে এনআরসি সংক্রান্ত আলোচনার প্রভাব আছে। অসমে এনআরসি-ছুট ১৯ লক্ষ মানুষের মধ্য়ে ১১ লক্ষ হিন্দু। সেই কারণে করিমপুর এবং কালিয়াগঞ্জের হিন্দু ভোটারদের মধ্যেও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। রাজ্য বিজেপির নেতাদের অনেকে মনে করছেন, তাঁদের আতঙ্ক যুক্তি দিয়ে দূর করতে না পারলে উপনির্বাচনে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ওই নেতাদের আরও বক্তব্য, এনআরসি নিয়ে বিরোধীদের প্রচার খণ্ডন করতে পর্যাপ্ত তৎপরতার অভাব আছে। আরএসএসের পক্ষ থেকে এনআরসি এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সভা করা হলেও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে তা করা না হলে মানুষ ভরসা পাবেন না।
লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে করিমপুরে বিজেপি ১৪ হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে আছে। সেখানে এনআরসি-কাঁটা যুক্ত হলে সঙ্কট আরও বাড়তে পারে বলে দলেরই একাংশের মত।
আরও পড়ুন: নিঝুম রাতে ঘরে এলেন আট শ্রমিক
কালিয়াগঞ্জের ক্ষেত্রে দলের আরও একটি পর্যবেক্ষণ হল— লোকসভা ভোটে তৃণমূল এবং সিপিএমের মধ্যে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ায় সেখানে বিজেপির লাভ হয়েছিল। কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় বিজেপি এগিয়েছিল প্রায় ৫৭ হাজার ভোটে। ওই বিধানসভা যে লোকসভার মধ্যে পড়ে, সেই রায়গঞ্জেও জিতেছিলেন বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী। কিন্তু আসন্ন উপনির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ না হলে কালিয়াগঞ্জের লড়াই বিজেপির পক্ষে খুব মসৃণ হবে না বলে দলেরই একাংশের মত।