সূত্রের দাবি, ধৃত হাবিবুল্লাহ এবং কাজী এহসান গত এক বছরে ২০ জন বাংলাদেশিকে সীমান্ত টপকে এ দেশে এনেছিল। ফাইল ছবি
জঙ্গিদের ডেরা হিসেবে দক্ষিণবঙ্গের সীমান্তবর্তী নানা জেলার নাম আগেই উঠে এসেছে। এ বার কি উত্তরবঙ্গও জঙ্গিদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে? সম্প্রতি শাসন থেকে আল-কায়দার উপমহাদেশীয় শাখার দু’জন সদস্যকে গ্রেফতার করার পরে এমনই তথ্য পেয়েছেন রাজ্যের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) গোয়েন্দারা। সূত্রের দাবি, ধৃত হাবিবুল্লাহ এবং কাজী এহসান গত এক বছরে ২০ জন বাংলাদেশিকে সীমান্ত টপকে এ দেশে এনেছিল এবং অসম লাগোয়া উত্তরবঙ্গের তিনটি জেলায় তাদের রাখা হয়েছিল। ওই জায়গাগুলিতে তল্লাশি করছেন গোয়েন্দারা।
একটি সূত্রের দাবি, গত মার্চে অসমে আল কায়দার কয়েক জন সদস্য ধরা পড়ার পরে উত্তরবঙ্গের কথা প্রথম জানা গিয়েছিল। এ বার ধৃত দু’জনের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য সেই খবরকেই আরও জোরালো করছে বলে গোয়েন্দারা জানান। গোয়েন্দারা আরও জানতে পেরেছেন, ওই বাংলাদেশিদের এ দেশের ভুয়ো পরিচয়পত্রও দেওয়া হয়েছিল। সেই সব নথি অসম এবং ত্রিপুরার কয়েকটি জায়গায় তৈরি করা হয়েছিল। ওই পরিচয়পত্র দিয়েই দেশের নানা প্রান্তে তাদের পাঠানো হত।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, উত্তরবঙ্গে ওই বাংলাদেশিদের থাকার ব্যবস্থা করেছিল হাবিবুল্লাহ। তার বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে। স্বভাব মিশুকে হাবিবুল্লাহ সহজেই লোকের সঙ্গে মিশে প্রভাব বিস্তার করতে পারত। হাবিবুল্লাহ-ই কোচবিহারের কয়েক জায়গায় জঙ্গি সংগঠনের প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিল। সেই সূত্রেই ওই জায়গাগুলিতে সন্দেহভাজন বাংলাদেশি জঙ্গিদের লুকিয়ে রাখা হয়েছিল বলে অনুমান। একই ভাবে জলপাইগুড়ির সীমান্তবর্তী কয়েকটি এলাকার নামও গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।
গোয়েন্দারা মনে করছেন, দক্ষিণবঙ্গে মুর্শিদাবাদ, মালদহে একাধিক জঙ্গি ডেরা পুলিশ নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ায় উত্তরবঙ্গকে বেছে নিচ্ছে জঙ্গিরা। উত্তরবঙ্গের সীমান্ত টপকে যেমন বাংলাদেশে যাওয়া যায় তেমনই উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও আত্মগোপন করার সুবিধা আছে।
হাবিবুল্লাহ এবং কাজী এহসান তরুণদের মগজধোলাইয়ের কাজ করত বলে গোয়েন্দাদের দাবি। তাই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তিক এলাকায় তরুণদের মধ্যে জঙ্গি মতাদর্শের প্রভাব কিছু পড়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। এই ধরনের ডেরার কাছেপিঠে ভোজসভা দিয়ে তরুণদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে জঙ্গিরা। সম্প্রতি তেমন কোনও ভোজসভা হয়েছে কিনা, তারও খোঁজ চলছে।