বাঁধ পরিদর্শনে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।
বর্ষার আগেই যাতে সুন্দরবনে বাঁধ সংস্কারের কাজ শেষ করে ফেলা যায়, তার জন্য সরেজমিন পরিস্থিতি দেখে এলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরাও সঙ্গে ছিলেন।
বুধবার দুপুরে লঞ্চে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, সাগর, নামখানা ও পাথরপ্রতিমা ব্লকে বাঁধ মেরামতি দেখতে যান সেচমন্ত্রী। তিনি জানান, আয়লায় যে সব বাঁধগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তার অধিকাংশের মেরামতি শুরু হয়েছে। সেই কাজের গতিপ্রকৃতি দেখতেই তিনি এসেছেন।
দুপুর ১২টা নাগাদ কাকদ্বীপের লট-৮ থেকে লঞ্চে কচুবেড়িয়ার দিকে রওনা দেন মন্ত্রী। সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা, পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা ছাড়াও সঙ্গে ছিলেন সেচ দফতরের বিভাগীয় বাস্তুকার গৌতম চট্টোপাধ্যায়। তিনি মন্ত্রীকে জানান, আয়লার সময়ে ওই এলাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার নদীবাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। প্রায় ৮০ শতাংশ মেরামত করা হয়ে গিয়েছে। সাগরের মৃত্যুঞ্জয় নগরেও ১৪২০ মিটার বাঁধের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তা তৈরি করতে সাড়ে চোদ্দ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। মন্ত্রী ওই বাঁধের কাজ দেখতে নামেন। শ্রমিকদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। পরে নামখানার চিনাই নদীর উত্তর ও দক্ষিণ নারায়ণগঞ্জ গ্রামেও বাঁধের কাজ দেখেন মন্ত্রী।
আয়লায় বাঁধের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল পাথরপ্রতিমার দক্ষিণ লক্ষ্মীনারায়ণপুর, দক্ষিণ সুরেন্দ্রগঞ্জে। পাথরপ্রতিমায় লঞ্চ থেকে নেমে মন্ত্রী কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পরে এলাকার কিছু লোকজন পানীয় জলের নলকূপ বসানোর দাবিতে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে পাথরপ্রতিমার বিধায়কের কাছে এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বিক্ষোভকারী আমিরা বিবি, মীরা মাইতিদের অভিযোগ, আট থেকে দশ মাস হল গ্রামের নলকূপ
খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। বাধ্য হয়ে কয়েক মাইল দূরের পাশের গ্রাম থেকে জল আনতে হচ্ছে। ওই গ্রামের বাসিন্দারা মাঝে- মধ্যে তা নিয়ে ঝামেলা করছে। শেষে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী আশ্বাস দেন, ‘‘উন্নয়ন পর্ষদের তহবিল থেকে নলকূপ বসানোর ব্যবস্থা করব।’’ এর পরে বিক্ষোভ বন্ধ হয়।
পরে পাথরপ্রতিমার জি প্লট হয়ে জগদ্দল নদীর বাঁধের দিকে চলে যায় সেচমন্ত্রীর লঞ্চ। রাজীববাবু বলেন, ‘‘সুন্দরবনে নদীবাঁধ সংস্কারের কাজ শেষ পর্যায়ে। যেগুলির কাজ বাকি, তা-ও শীঘ্র শুরু হবে। মানুষ যাতে বানভাসি না হন, সেই কারণে বর্ষার আগেই দ্রুত বাঁধ মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’