রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।
দিলীপ ঘোষের পরে এ বার দলের ‘বিক্ষুব্ধ’দের কার্যত সমর্থন করলেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘ওই নেতারা দলের রক্ত-মাংস। বিজেপির যখন এক শতাংশ ভোট ছিল, তখনও তাঁরা বিজেপিতে ছিলেন। তাঁদের বাদ দিয়ে বিজেপি নয়।’’
রাজ্য বিজেপির নতুন পদাধিকারী মণ্ডলী এবং জেলা সভাপতিদের মধ্যে মতুয়া প্রতিনিধিত্ব না থাকায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এবং কয়েক জন মতুয়া বিধায়কের ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে। পাশাপাশি, রাজ্য পদাধিকারী মণ্ডলীতে অধিকাংশ পুরনো নেতা বাদ পড়াতেও বিজেপির একাংশ ক্ষুব্ধ। গত কয়েক দিন ধরে এই বিষয়ে বৈঠক করেছেন শান্তনু, বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী, রাজ্য বিজেপির তিন সদ্য প্রাক্তন সহ সভাপতি রীতেশ তিওয়ারি, জয়প্রকাশ মজুমদার, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। কখনও শান্তনুর বাড়িতে, কখনও জয়প্রকাশ এবং প্রতাপের বাড়িতে বৈঠক হয়েছে।
ওই নেতারা কি সমান্তরাল ভাবে দল করছেন?
শমীকের জবাব, ‘‘কোনও সমান্তরালের বিষয় নেই। আমার কাছে কোনও বৈঠকের খবরও নেই। সংবাদমাধ্যমে বৈঠকের খবর দেখেছি। ঠাকুরবাড়িতে আমাদের মন্ত্রী আছেন। তা ছাড়া ওটা শ্রদ্ধার জায়গা। প্রণাম করতেও যেতে পারেন কেউ।’’ এর পরেই শমীকের সংযোজন, ‘‘যাঁদের নাম বলা হচ্ছে, তাঁরা বিজেপিতেই সম্পৃক্ত। বিজেপি তাঁদের চেনে, তাঁরাও বিজেপিকে চেনেন। সুতরাং তাঁরা বৈঠক করে থাকলে দলকে সঙ্ঘবদ্ধ রাখার জন্য করেছেন। যাঁরা এখন কমিটিতে নেই, তাঁদের সঙ্ঘবদ্ধ রাখার চেষ্টা করছেন। আমি এর মধ্যে কোনও বিভ্রান্তি দেখছি না।’’
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপও বলেছিলেন, ‘‘যাঁরা কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন, তাঁরা নিজেরা বসছেন। তাঁরা এত বছর কাজ করে দল বাড়িয়েছেন। এখন তাঁরা কী করবেন, তাঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা করছেন। এর মধ্যে কোনও দোষ আছে বলে আমি মনে করি না।’’
শমীকের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, তা হলে কি যাঁরা রাজ্য বিজেপির পদাধিকারী মণ্ডলী থেকে বাদ পড়েছেন, তাঁরা দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছেন? সেই জন্যই কি তাঁদের সঙ্ঘবদ্ধ রাখার চেষ্টা করার প্রয়োজন হচ্ছে?
বিজেপি সূত্রের অবশ্য খবর, ওই ‘বিক্ষুব্ধরা’ সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছেন ঠিকই, তবে তা দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিপরীতে। আগামিকাল, শনিবার পোর্ট ট্রাস্টের অতিথিশালায় ‘বিক্ষুব্ধ’দের সঙ্ঘবদ্ধ হওয়ার প্রয়াসের প্রথম বৈঠক।