লোকবল বলতে দু’জন ইনস্পেক্টর ও দু’জন ডিএসপি। অথচ হাতে রোজ ভ্যালি, আইকোর-সহ ৭টি বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত মামলা। স্বাভাবিক ভাবেই কর্মীর অভাবে নাজেহাল রাজ্যের আর্থিক অপরাধ দমন শাখা (ইওডাব্লিউ)। তার মধ্যেই কে ডি সিংহের সংস্থা অ্যালকেমিস্টের বিরুদ্ধে জোরদার তদন্তে নামতে হচ্ছে তাদের। পরিস্থিতি বুঝে বাধ্য হয়ে জেলা পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছে ইওডাব্লিউ। বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলায় অ্যালকেমিস্টের বিরুদ্ধে কী কী মামলা এবং সেখানে তাদের কী কী সম্পত্তি আছে, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে।
পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে চা বাগান, বর্ধমানে ২০ একর জমি-সহ এ রাজ্যে অ্যালকেমিস্টের একাধিক সম্পত্তির তালিকা তৈরির কাজও শুরু করে দিয়েছেন ইওডাব্লিউ-র তদন্তকারীরা। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে চণ্ডীগড়, শিমলা, দিল্লিতে কে ডি-র সংস্থার সম্পত্তি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। এমনকী, বিদেশেও ওই সংস্থার সম্পত্তি রয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তাঁরা।
নারদ-কাণ্ডে আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরেই কে ডি সিংহের বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে আসরে নেমেছে রাজ্য। ইতিমধ্যেই এই তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলার তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের তোড়জোড় শুরু করেছে লালবাজার। তার মধ্যেই ইওডাব্লিউ-ও কে ডি-র সংস্থার সম্পত্তি খতিয়ে দেখে তালিকা তৈরির কাজে হাত দিচ্ছে। সূত্রের খবর, আর্থিক অপরাধ দমন শাখা প্রথম ধাপে রাজ্যে এবং তার পরে ভিন্ রাজ্যে কে ডি-র সংস্থার সম্পত্তি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা নিয়েছে। বিদেশে সম্পত্তি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের মাধ্যমে এগোতে হবে।
সূত্রের খবর, গত ১৭ জানুয়ারি কে ডি সিংহের সংস্থা অ্যালকেমিস্টের বিরুদ্ধে গরফা থানায় একটি মামলা হয়। তার ভিত্তিতেই বিশেষ তদন্তকারী দল গড়া হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘‘সম্পত্তি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ প্রয়োজন হয়। আমরা সম্পত্তির তালিকা তৈরি করছি। তার পর সেটা রাজ্য সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে আদালতের কাছে পেশ করব। আদালত অধিগ্রহণের অনুমতি দিলে প্রশাসক নিয়োগ করে সেই সম্পত্তি নিলাম করার ব্যবস্থা করব। আমানতকারী খুঁজতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হবে।’’
সপ্তাহখানেক আগেই অ্যালকেমিস্টের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের খবর, অ্যালকেমিস্টের বিরুদ্ধে মূলত প্রতারণার অভিযোগের জাল বিছোচ্ছে তারা। সেই মামলায় কে ডি-কে ডেকে পাঠানো হবে।