ছিল মুড়ির টিন, হয়ে গেল ব্যালট বাক্স!
ব্যাপারটা সে-রকমই। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের ভোটের ব্যালট জমা পড়বে মুড়ির টিনে। অবশ্য তার আগে কিছু রূপটান দেওয়া হবে তাতে, আর সেই পর্ব শেষ হলেই তা রূপান্তরিত হবে ‘ইম্প্রোভাইজড ব্যালট বক্স’-এ। দেখতে ব্যালট বাক্সেরই মতো। সরকারি পরিচয়ও তেমনই— পঞ্চায়েতের এক কর্তার কথায়, ‘‘মুড়ির টিন দিয়ে এটি তৈরি হলেও আমাদের খাতাতে ইম্প্রোভাইজড বক্স হিসাবেই নথিভুক্ত হয়।’’
ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের বাকি দুটি ক্ষেত্রে, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদে, অবশ্য মুড়ির টিন চলে না। পঞ্চায়েত সমিতির ব্যালট জমা পড়বে ‘গোদরেজ বক্সে’। আর জেলা পরিষদের জন্য বরাদ্দ ‘বাঙ্গো ব্যালট বক্স’। মুড়ির টিনের থেকে বাকি দুটি ব্যালট বাক্স অনেক শক্তপোক্ত।
এবং এই প্রথম নয়, বিগত কয়েকটি পঞ্চায়েত নির্বাচনেই এমন বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
কিন্তু ব্যালট বাক্সের জন্য কেন মুড়ির টিন?
প্রথমত, মুড়ির টিন আকৃতিতে সাধারণত বড় হয়। একসঙ্গে অনেক ব্যালট ধরে যায় তাতে। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে যে ব্যালট দেওয়া হয়, তার আকারও বড়। তাই বড় বাক্সে সুবিধা হয়। দ্বিতীয়ত, আর্থিক সাশ্রয়। রাজ্যে প্রায় ৪৯ হাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন রয়েছে। এত আসনের জন্য অন্য বাক্স ব্যবহার করতে হলে খরচও অনেক বাড়বে।
আরও পড়ুন: শান্তি পাকা হলেই উন্নয়ন
প্রসঙ্গত, এক-একটি বুথের জন্য সর্বোচ্চ ৬টি ব্যালট বাক্স বরাদ্দ হয়। সাধারণত, গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে একটি ব্যালট বাক্সই দরকার হয়। আর জেলা পরিষদের জন্য বরাদ্দ ‘বাঙ্গো ব্যালট বক্স’-এ ৮০০টির বেশি ব্যালট জমা করা যায় না। তবে প্রথম বাক্সটি সম্পূর্ণ সিল করার পরে দ্বিতীয়টি খোলা হয়। ভোটারদের সুবিধার্থে দুটি ব্যবস্থা করা হয়— কোথাও তিনটি ব্যালট বাক্সের আলাদা রঙ করা হয়। আবার কোথাও বাক্সের গায়ে সংশ্লিষ্ট স্তরের নাম লেখা থাকে। নতুন তৈরি হওয়া ব্যালট বাক্স পনেরো-কুড়ি বছরের জন্য ব্যবহার হয়। তার পর তা বদলে ফেলা হয়।
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য নতুন প্রায় ৪০ হাজার ব্যালট বাক্স তৈরির বরাত দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। খরচ পড়বে দশ কোটি টাকার মতো। রাজস্থানের একটি সংস্থা এই নতুন ব্যালট বাক্স তৈরি করছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। সার্ক অর্ন্তভুক্ত দেশগুলির মধ্যে যেখানে ব্যালটে ভোট হয়, সেই সব দেশে ব্যালট বাক্স সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে রয়েছে এই সংস্থাটি।