দুয়ারে সরকার।
তিনি কথা দিলে কথা রাখেন। জানিয়েছিলেন, রাজ্যের সব মানুষের হাতেই থাকবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এ বার স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আসছেন বন্দিশালার মানুষজন। তেমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে কারা দফতর থেকে নির্দেশ পেয়েছেন জেলাশাসকরা।
রাজ্য জুড়েই ১ ডিসেম্বর থেকে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। যা শেষ হওয়ার কথা ৩০ জানুয়ারি। এই সময়সীমায় চার রাউন্ডে রাজ্যের গ্রাম পঞ্চায়েত, পুরসভায় বিশেষ ক্যাম্প চলছে। আর সেই তালিকায় যুক্ত হল রাজ্যের সংশোধনাগার। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য কারা দফতর থেকে নির্দেশ এসেছে বলে জানাচ্ছেন বিভিন্ন জেলাশাসকরা। বলা হয়েছে, তাঁর অধীনে থাকা জেলার বিভিন্ন সংশোধনাগারেই ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির জন্য শিবির আয়োজন করতে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য বিভিন্ন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ জেলাশাসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পদক্ষেপ করবেন, তা-ও ওই চিঠিতে জানিয়েছে কারা দফতর।
কেন্দ্রীয়, জেলা, বিশেষ, মুক্ত, মহকুমা এবং মহিলা – রাজ্যের ৬০টি সংশোধনাগারে বিচারাধীন ও দণ্ডিত বন্দির সংখ্যা ২৪ হাজারের মতো। তাঁদের মধ্যে যাঁরা এ রাজ্যের বাসিন্দা, তাঁরা সকলেই এই স্বাস্থ্যসাথীর আওতাধীন হবেন। ভিনরাজ্য বা ভিন দেশের বাসিন্দা-বন্দিরা এই সুবিধা পাবেন না।
কারার অন্দরে থাকা মানুষদের জন্য কবে থেকে, কী ভাবে ক্যাম্প হবে, তা জেলা প্রশাসন আর সংশ্লিষ্ট সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে স্থির করবেন। সাধারণ ভাবে, সংশোধনাগারে থাকাকালীন সরকারি হাসপাতালেই বন্দিদের চিকিৎসা হয়। আবার অনেক সাজাপ্রাপ্ত বন্দি প্যারোলে বেরিয়ে বাইরে চিকিৎসা করান, ফলে তাঁদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড অনেকাংশেই সুবিধা দেবে। পাশাপাশি, রাজ্যে বিচারাধীন বন্দির সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে মামলার নিষ্পত্তির তাঁদের কারও কারও মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বা অনেকে আবার কয়েক মাস বা কয়েক বছর জেল জীবন কাটিয়ে মুক্ত হন, তাঁদেরও সুবিধা দেবে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত বলে মত প্রশাসনিক কর্তা-আধিকারিকদের অনেকের।
সরকারি প্রকল্প মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বিভিন্ন সময়ে শিবিরের আয়োজন কখনও কখনও প্রত্যক্ষ করেছেন অনেকেই। কিন্তু সরকারি প্রকল্পের আবেদনপত্র জমা নিতে বন্দিশালায় শিবিরের আয়োজন নতুন পথের সূচনা করল, তেমনই মত প্রশাসনিক কাজকর্মের চর্চা করা ব্যক্তিদের।