Violence

‘হস্টেলে ঢুকেছিস কেন, বলে মার শুরু’

অংশুক চলে যাওয়ার পরেও মনটা অবশ্য কিন্তু কিন্তু করছিল। ঠিকঠাক হস্টেলে পৌঁছেছে কিনা জানার জন্য অংশুককে আমি বারবার ফোন করতে থাকি।

Advertisement

দেবব্রত নাথ (আক্রান্ত ছাত্র)

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২০ ০২:২৮
Share:

ক্যাম্পাসের মধ্যে হস্টেলে যে এ রকম ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে, দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। প্রতিদিনের মতো বুধবার রাতেও রতনপল্লিতে বন্ধুদের সঙ্গে বসেছিলাম। সেখানে অংশুক মুখোপাধ্যায় নামে আমার এক বন্ধুও ছিল। তখনই জানতে পারি, অংশুকের খোঁজে কয়েক জন বুধবার সন্ধ্যায় বিদ্যাভবন হস্টেলে চড়াও হয়েছে। অংশুকের কথাবার্তা শুনে বুঝতে পারছিলাম, ও খুবই ভয়ে রয়েছে। এর পরে আমি অংশুককে হস্টেলে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলি। সে আমাদের আশ্বস্ত করে বলে, ‘কোনও ভয় নেই, আমি একাই যেতে পারব’।

Advertisement

অংশুক চলে যাওয়ার পরেও মনটা অবশ্য কিন্তু কিন্তু করছিল। ঠিকঠাক হস্টেলে পৌঁছেছে কিনা জানার জন্য অংশুককে আমি বারবার ফোন করতে থাকি। কিন্তু সেই সময় অংশুকের সঙ্গে ফোনে কোন ভাবেই যোগাযোগ করতে না পারায় আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ আমি, স্বপ্ননীল ও সুদীপ অংশুকের খোঁজে বিদ্যাভবন হস্টেলে যাচ্ছিলাম। আমাদের পথ আগলায় সুলভ কর্মকার নামে ওই হস্টেলের এক ছাত্র। কার অনুমতিতে আমরা হস্টেলে যাচ্ছি, তা আমাদের কাছে জানতে চায়। আমি পাল্টা বলি, ‘কার অনুমতিতে আমরা হস্টেলে ঢুকছি তোমাকে কেন বলব?’ এর পরেই সুলভ বলতে থাকে, ‘তোদের খুব বাড় বেড়েছে! তোদের ব্যবস্থা হবে।’

এই নিয়ে আমাদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। তখনই অচিন্ত্য বাগদি, সাবের আলি-সহ ১০-১২ জন আমাদের উপরে চড়াও হয়। ওরা প্রথমে আমাকে উইকেট দিয়ে মারতে থাকে। পরে স্বপ্ননীলের উপরে চড়াও হয়। বিশ্বভারতীর নিরাপত্তাকর্মী ও নিরাপত্তা আধিকারিকেরা আসার পরেও তাঁদের সামনেই চলে আক্রমণ। পরে অবশ্য রক্ষীরা ওদের সরিয়ে দেন। নিরাপত্তাকর্মীদের গাড়িতে পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে আমাকে ও স্বপ্ননীলকে ভর্তি করানো হয়। ঘটনার খবর পেয়ে আমার বন্ধু ও শিক্ষকেরা হাসপাতালে উপস্থিত হন। সেখানেও অচিন্ত্য, সাবের পৌঁছে গিয়ে আমাদের বাকি বন্ধুদের মারধর করে ও হুমকি দিতে থাকে। গালিগালাজ করা হয় শিক্ষকদেরও।

Advertisement

আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীতে হামলা চালাল কারা, পরিচয় নিয়ে তরজা

আতঙ্কে সাহায্য চেয়ে শান্তিনিকেতন থানায় বারবার ফোন করা হলেও ক্যাম্পাস চত্বরে পুলিশকে আসতে দেখা যায়নি বুধবার রাতে। এই অবস্থায় আমরা প্রত্যেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা চাই, যারা আমাদের উপরে এমন আক্রমণ চালাল, তাদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement