ট্রেন ঢুকেছে হাওড়ায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে। নিজস্ব চিত্র
করোনা রুখতে নানা কথা বলছে রেল। দীর্ঘ সময় রেল চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকার পরে এখন পশ্চিমবঙ্গে লোকাল ট্রেন চললেও তা সীমিত সংখ্যায়। স্বাভাবিক সময়সারণি মেনেও চলছে না লোকাল ট্রেন। দিনের ব্যস্ত সময়ে লোকাল ট্রেনের ছবি মানেই বাদুড়ঝোলা ভিড়। যাত্রীদের করোনা বিধি মানার বালাই নেই।
এমন যখন বাস্তব ছবি সেখানে ভারতীয় রেল একটি বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষকে করোনা মোকাবিলায় সতর্ক করেছে। তাতে জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ‘স্কুইড গেম’-এর উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। অপরের থেকে দু’গজ দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি আরও তিনটি পরামর্শ দিয়েছে রেল। টিকা নিতে হবে, মাস্ক পরে থাকতে হবে আর বারবার স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।
বুধবার রেল মন্ত্রক ফেসবুকে এই সংক্রান্ত পোস্ট করার পরে তা নিয়ে লোকাল ট্রেনের যাত্রীরা সমালোচনায় মেতেছেন। তাঁদের বক্তব্য, দু’গজ দূরত্ব তো অনেক বড় কথা কিন্তু এখন যে ভাবে ট্রেনে সফর করতে হচ্ছে তাতে দু’জন মানুষের মধ্যে দুই মিলিমিটার দূরত্বও নেই। ঠেসাঠেসি ভিড়েই মানুষ চলছেন। ভ্যাপসা গরমে মুখে মাস্ক রাখা যাচ্ছে না। কারও মুখে মাস্ক না থাকলেও কেউ আর আপত্তি করছেন না। বরং নিজের মাস্ক নামিয়ে ফেলছেন। হাওড়া শাখায় উত্তরপাড়া স্টেশনের যাত্রী শ্যামল জানার বক্তব্য, ‘‘এক ঘণ্টা পর পর ট্রেন। তাও কোনটা কখন আসবে, তা বোঝার উপায় নেই। দিন দিন ট্রেনের উপরে নির্ভরতা বাড়ছে। ফলে ভিড় মেনে নিতে হচ্ছে। ঝুঁকির কথা মাথায় রাখলে তো পেট চলবে না।’’ একই কথা বেসরকারি চাকুরে প্রতিমা দাসের। তিনি বললেন, ‘‘অফিসে তো যেতেই হবে। ব্যান্ডেল থেকে তো গাড়ি করে যাওয়া যায় না। বাসও নেই। অফিস টাইমে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে চাপছি। কিন্তু স্টেশনে বা ট্রেনে যখন করোনাকালে দূরত্ব মেনে চলার ঘোষণা শুনি তখন সত্যিই হাসি পায়।’’ যাত্রীদের অনেকেই বলছেন, দুর্গাপুজোর পরে যে ভাবে রাজ্যে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে এখন ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়ানো দরকার। সেটা হলেই যাত্রীরা বিধি মেনে চলতে পারবেন।
পূর্ব রেলের হাওড়া শাখার মতোই ছবি শিয়ালদহ শাখাতেও। তবে শিয়ালদহতে যে যে ট্রেন চলছে, তার গতিবিধি রেলের তৈরি নতুন অ্যাপে দেখা যাচ্ছে বলে অনেকটা সুবিধা পাচ্ছেন যাত্রীরা। অন্তত স্টেশনে অপেক্ষা কমেছে। কিন্তু সেই সুবিধা পাচ্ছেন না হাওড়া শাখার যাত্রীরা। বিজ্ঞাপনে ভিড় কমানোর কথা বলেও কম লোকাল ট্রেন চালানো নিয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সব লোকাল ট্রেন চালু না করা গেলে ভিড় কমবে না। কিন্তু সেটা আমাদের হাতে নেই। রাজ্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। আর রেলের পক্ষ থেকে মানুষকে বার বার বলা হচ্ছে, কেউ যেন খুব জরুরি কারণ ছাড়া ট্রেন সফর না করেন।’’