ছবি: সংগৃহীত।
করোনা সংক্রমণ এড়াতে শহরতলির লোকাল ট্রেন পরিষেবা পুনরায় চালু করার জন্য দু’টি হাতিয়ারের কথা ভাবছে রেল। ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং স্মার্টফোনে টিকিট ক্রয়। সব কিছু ঠিক থাকলে পুজোর কয়েক সপ্তাহ আগেই লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু হতে পারে বলে রেল সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে।
কিন্তু লোকাল ট্রেনে কী ভাবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি। এই বিষয়ে মেট্রোর দিকে তাকিয়ে আছে রেল। ভিড় এড়াতে মেট্রোর মতো লোকাল ট্রেনেও ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা ভাবছে তারা। মেট্রোয় ওই প্রযুক্তি কী ভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে, সেটাই দেখে নিতে চান রেলকর্তারা। এই ইঙ্গিত দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার সঞ্জয়কুমার মহান্তি শুক্রবার জানান, টিকিট কাউন্টারে ভিড় থেকে করোনা সংক্রমণ এড়াতে রেল জোর দিতে পারে স্মার্টফোনে অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কাটার উপরেও। মেট্রোয় যে-ভাবে আপাতত টোকেন ব্যবহার করে যাতায়াত বন্ধ রাখার কথা ভাবা হয়েছে, অনেকটা সেই ভাবেই।
এ দিন অনলাইনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মহান্তি জানান, তাঁরা লোকাল ট্রেন চালু করার বিষয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন। পরিস্থিতি যাচাই করে এবং রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই পুনরায় পরিষেবা শুরু করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পূর্ব রেল ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে আলোচনায় বসতে চেয়ে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে। নবান্ন নির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানালে পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেল একত্রে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে বলে খবর।
আরও পড়ুন: আর পূর্ণ না-করার ভাবনা, কন্টেনমেন্ট জ়োনেই শুধু লকডাউন?
অতিমারির আবহে প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনের কামরায় ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি টিকিট কাউন্টারে ভিড় সামলানোর বিষয়টিও ভাবাচ্ছে রেলকে। কাউন্টারগুলিতে ভিড় ঠেকাতে না-পারলে যাত্রীদের পাশাপাশি রেলকর্মীদের মধ্যেও দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা। তাই অসংরক্ষিত শ্রেণির টিকিট কাটার জন্য রেলের নিজস্ব অ্যাপ ‘ইউটিএস অন মোবাইল’ (আন-রিজার্ভড টিকিটস অন মোবাইল) ব্যবহারের উপরে জোর দেওয়া হতে পারে। ওই অ্যাপের ব্যবহার আগের তুলনায় বাড়লেও এখনও অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কাটতে ইচ্ছুক যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। এই অবস্থায় ওই অ্যাপের প্রয়োগ বাড়লে যাত্রীদের কাউন্টারে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করার প্রয়োজন হবে না। বেশি সংখ্যায় টিকিট কাউন্টার খোলা রাখার জন্য রেলের উপরে চাপ কমবে। কমবে সংক্রমণের আশঙ্কাও।
আরও পড়ুন: মেট্রো চালুর খবরে খুশি, বিধি মানায় জোর অটোচালকদের
তবে এই ব্যবস্থাকে এখনই চূড়ান্ত বলতে চাইছেন না রেলকর্তারা। কলকাতা মেট্রো ছাড়াও মুম্বই, বেঙ্গালুরুর মতো যে-সব শহরে এখন লোকাল ট্রেন চলছে, সেখানকার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাইছেন তাঁরা। রেলের স্টেশনগুলি মেট্রোর মতো চার দিক ঘেরা এবং সুরক্ষিত নয়। ট্রেন-পিছু যাত্রীও অনেক বেশি। সর্বত্র যে রক্ষী মোতায়েন করা সম্ভব নয়, রেলকর্তারাও তা মেনে নিচ্ছেন। ফলে মেট্রোর ভিড় নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি কতটা অনুসরণ করা যাবে, সেই বিষয়ে সংশয় আছে। তবু করোনার মধ্যে পরিষেবা চালু করার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়টি রেলকে ভাবাচ্ছে।
লকডাউনের জেরে পণ্য পরিবহণে একটানা মন্দা চলার পরে অগস্ট থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে বলে জানান দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মহান্তি।