কুড়মিদের অবরোধে বাতিল হয়েছে বেশ কিছু ট্রেন। হাওড়া স্টেশনে উদ্বিগ্ন যাত্রীরা। শুক্রবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
প্রায় ৬০ ঘণ্টা কেটে গেলেও কুড়মিদের রেল অবরোধ নিয়ে জট কাটল না। টানা অবরোধে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। বাড়ছে রেলের লোকসানও।
জনজাতি তালিকাভুক্তির দাবিতে গত বুধবার থেকে খড়্গপুর গ্রামীণের খেমাশুলিতে ‘রেল টেকা, ডহর ছেঁকা’ শুরু করেছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। এর জেরে কলকাতা-মুম্বই ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশাপাশি অবরুদ্ধ হয়েছে টাটানগর, বিলাসপুর, মুম্বইয়ের মূল রেলপথ। এ ছাড়াও কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের ডাকে ‘ঘাঘর ঘেরা’ কর্মসূচিতে গত মঙ্গলবার থেকে খেমাশুলিতেই অবরুদ্ধ হয়েছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। রেল অবরোধ চলছে আদ্রা-চান্ডিল শাখার পুরুলিয়ার কুস্তাউর স্টেশনেও।
দক্ষিণ পূর্ব রেল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে দু’শোর বেশি ট্রেন বাতিল হয়েছে। শুক্রবার ৭১টি দূরপাল্লা ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল হয়েছে। আজ, শনিবার ৭২টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। খড়্গপুর ডিভিশনের হাওড়া, শালিমার বা খড়্গপুর থেকে টাটানগর, বিলাসপুর, মুম্বইগামী সরাসরি ট্রেন বাতিল হয়। তবে কিছু ট্রেন ঘুরপথে চান্ডিল হয়ে যাতায়াত করছিল। এই রুটেও কোটশিলায় অবরোধের ডাক দিয়েছে কুড়মিরা। ফলে, টাটানগর, বিলাসপুর, মুম্বই রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ। খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার রাজেশ কুমার বলেন, “কার্যত বাধ্য হয়েই টাটানগর, বিলাসপুর, মুম্বই রুটের সব ট্রেন বাতিল করলাম।”
গত সেপ্টেম্বরে টানা ৬ দিন খেমাশুলিতেই চলেছিল কুড়মিদের জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধ। তখন রেলের ৪০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছিল। এ বার এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে বলে রেল কর্তৃপক্ষের দাবি। খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার রাজেশ কুমার বলেন, “এটা সম্পূর্ণ রাজ্যের বিষয়। আমাদের কিছু করার নেই। এমনটা চললে লোকসান বাড়বে।”
জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কুড়মিদের আলোচনায় ইতিবাচক ইঙ্গিত মেলেনি। আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল নেতা অজিত মাহাতো এ দিনও দাবি করেন, ‘‘সরকার হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে। দাবি থেকে আমরা সরছি না।’’ কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য নেতা রাজেশ মাহাতোরও হুঁশিয়ারি, “দাবি পূরণ না হলে জঙ্গলমহল স্তব্ধ করা হবে।”