অমিয়কুমার বাগচী। —ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অর্থনীতিবিদ অমিয়কুমার বাগচীর জীবনাবসান হয়েছে। বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তাঁর ছোট মেয়ে বর্ণিতা সমাজমাধ্যমে এ কথা জানান। অর্থনৈতিক ইতিহাস তথা অর্থনীতির মার্কসবাদী বীক্ষার এই বরণীয় গবেষক, শিক্ষক, সুলেখক কিছু দিন আগেও তাঁদের যোধপুর পার্কের বাড়িতে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দেখা করেছেন, কথা বলেছেন। অমিয়ের স্ত্রী নারীবাদী অধ্যাপক, লেখক, সমাজকর্মী যশোধরা বাগচীর বছর দশেক আগে জীবনাবসান হয়। সদ্য প্রয়াত অর্থনীতিবিদের দুই কন্যা, তাঁদের পরিবারবর্গ রয়েছেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস তিনেক ধরে বয়সজনিত নানা অসুখের জটিলতায় ভুগছিলেন অমিয়। তাঁর বড় মেয়ে তিস্তা শেষ সময়ে প্রবীণ অধ্যাপকের কাছেই ছিলেন।
অমিয়ের জন্ম মুর্শিদাবাদে। পড়াশোনা প্রেসিডেন্সি কলেজে এবং কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে। কেমব্রিজে পিএইচ ডি-র পরে কলকাতায় প্রেসিডেন্সিতেই শিক্ষকতা শুরু করেন অমিয়। এর পরে দীর্ঘ সময়ে কলকাতায় সদ্য প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর স্টাডিজ় ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। সেন্টার থেকেই রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া অধ্যাপক হিসেবে অমিয় অবসর নেন।
এর পরে কলকাতায় নবগঠিত ইনস্টিটিউট অব ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ়-এর প্রতিষ্ঠাতা অধিকর্তা হিসেবে তিনি যুক্ত হন। উপনিবেশ যুগের বাণিজ্য ইতিহাস থেকে ভারতীয় ব্যাঙ্ক এবং অর্থব্যবস্থার ইতিহাসের প্রবক্তা হিসেবে অমিয়ের অবদান সর্বমান্য বলা যায়। স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার ইতিহাস লেখক হিসেবে এক যুগেরও বেশি কাজ করেছেন। ভাবী কালের জন্য স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া-র সুসংগঠিত মহাফেজখানা গড়ে তোলায় অমিয়ের অবদান স্বীকৃত। তাঁর বিভিন্ন বইয়ের মধ্যে পেরিলাস প্যাসেজ: ম্যানকাইন্ড অ্যান্ড দ্য গ্লোবাল অ্যাসেনডেন্সি অব ক্যাপিটাল, কলোনিয়ালিজ়ম অ্যান্ড ইন্ডিয়ান ইকনমি, ক্যাপিটালিজ়ম অ্যান্ড লেবর রিডিফাইনড : ইন্ডিয়া অ্যান্ড দ্য থার্ড ওয়র্ল্ড, দ্য ইভোলিউশন অব দ্য স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, দ্য ডেভেলপমেন্টাল স্টেট ইন হিস্ট্রি অ্যান্ড ইন দ্য টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি প্রমুখ রয়েছে। ২০০৫ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়।