শুক্রবার নদিয়ার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে মা ফজিলা বিবির। প্রতীকী ছবি।
মা থাকতেন ভারতে, দুই মেয়ে বাংলাদেশে। বছরদেড়েক আগে ভারতে বাপের বাড়ি এসেছিলেন যখন মেয়েরা, তখনই শেষ দেখা হয়। মেয়েরা শ্বশুরঘরে ফিরে গেলে ফের দুই সংসারের মধ্যে মাথা তুলে দাঁড়ায় কাঁটাতারের বেড়া। মা বেঁচে থাকতে সেই সীমানা আর পেরনো হয়নি। শুক্রবার নদিয়ার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে মৃত্যু হল মা ফজিলা বিবির। দুই মেয়ে খবর পেয়ে কেঁদে আকুল। শেষ দেখাটুকুও কি হবে না? শেষ পর্যন্ত ব্যবস্থা হল বিএসএফ ও বিজিবি-র যৌথ উদ্যোগে। বাংলাদেশের কুতুবপুরের বাসিন্দা রাবিয়া বিবি ও কুড়ুলপাড়ার বাসিন্দা সখেরা বানু দেখতে পেলেন তাঁদের মায়ের দেহ। কী ভাবে?
ফজিলার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, উপায়ান্তর না দেখে তাঁর ছেলেরা বিএসএফ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিষয়টি শোনার পর বিএসএফ যোগাযোগ করে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি বা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্তারা নিজেদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেন যে, ফজিলা বিবির মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ‘জিরো লাইনে’। খবর যায় রাবিয়া বিবি ও সখেরা বানুর কাছে।
শুক্রবার হাটখোলা গ্রামে কাঁটাতারের তিন নম্বর গেট সংলগ্ন ৯৩ নম্বর পিলারের কাছে ফজিলা বিবির মৃতদেহ রাখা হয়। পরিবারের লোকেদের সঙ্গে থাকেন বিএসএফ জওয়ানেরা। ও পারে, তখন দুই মেয়ে। সঙ্গে পরিবারের লোক, বিজিবি জওয়ানেরা। সকলের উপস্থিতিতে কাফন তুলে শেষ বারের মতো মায়ের মুখ দেখেন দুই মেয়ে।
ফজিলা বিবির নাতি হারুণ হালসানা বলেন, “অনেক বছর আগে আমার দুই পিসির বিয়ে হয়েছিল বাংলাদেশে। সীমান্তে কড়াকড়ি শুরু হওয়ার পর থেকে ঠাকুমার সঙ্গে পিসিদের দেখাসাক্ষাৎ বন্ধ হয়ে যায়। বছরদেড়েক আগে শেষ বার পিসিরা ভিসা করে দেশে এসেছিলেন। ওই তাঁদের সঙ্গে ঠাকুমার শেষ দেখা।”