কলাইকুন্ডায় ভারতীয় বায়ুসেনার ‘গরুড়’ বাহিনীর মহড়া। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
আগামী দিনে যে-কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে চায় ভারত ও আমেরিকার বিমানবাহিনী। সেই লক্ষ্যে ১৩ বছর পরে ভারতের আকাশে একসঙ্গে মহড়া দিল দু’দেশের যুদ্ধবিমান। পারস্পরিক রণনীতির আদানপ্রদান চলল যৌথ মহড়ার মাধ্যমে।
সোমবার কলাইকুন্ডা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে সেই মহড়া দেখানো হয় সংবাদমাধ্যমকে। ভারতীয় বায়ুসেনা সূত্রের খবর, ৩ ডিসেম্বর ‘কোপ ইন্ডিয়া-২০১৮’ নামে ওই মহড়া শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ বারেই প্রথম ১২ দিনের দ্বিপাক্ষিক মহড়া একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কলাইকুন্ডা ও পানাগড়ে। ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে এই মহড়ার ডিরেক্টর এয়ার কমোডর জে এস মান বলেন, ‘‘যে-কোনও পরিস্থিতিতে ভারত ও আমেরিকার বায়ুসেনাকে একসঙ্গে কাজ করতে হলে দু’পক্ষের মধ্যে সমন্বয়ে যাতে ঘাটতি না-হয়, সেই জন্যই এই প্রশিক্ষণ।’’ প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, দু’দেশের এই মহড়া আসলে চিনের মোকাবিলা করার প্রস্তুতি। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারতীয় বায়ুসেনার কর্তারা অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
মার্কিন বায়ুসেনার মহড়া ডিরেক্টর কর্নেল ড্যারিল ইন্সলে বলেন, ‘‘ভারতীয় বায়ুসেনার সঙ্গে বন্ধুত্বের বন্ধন দৃঢ় করতে এই মহড়া আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’ তিন-চার বছর অন্তর এই ধরনের মহড়ার আয়োজন করা দরকার বলে মন্তব্য করেন ড্যারিল। তাঁদের তরফে ভারতে আনা হয়েছে ১২টি ‘এফ-১৫’ এবং তিনটি ‘সি-১৩০’ যুদ্ধবিমান। ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে মহড়ায় ব্যবহার করা হচ্ছে পাঁচটি মিরাজ, ছ’টি জাগুয়ার, ১০টি সুখোই-৩০ যুদ্ধ বিমান এবং ‘সি-১৩০জে’, এডব্লিউইসিএস (রেডার-যুক্ত বিশেষ বিমান) যুদ্ধবিমান।
ভারতীয় বায়ুসেনা সূত্রের খবর, যুদ্ধের সময় শত্রু পক্ষের বিমানকে কী ভাবে প্রতিরোধ করতে হবে, প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তার ধরন বদলেছে। এই মহড়ায় সেই বিষয়ে মতামত, কারিগরি জ্ঞান আদানপ্রদান করছে ভারত ও আমেরিকা। এয়ার কমোডর জে এস মান জানান, ভারত ও আমেরিকার বায়ুসেনাদের মিলিয়ে আক্রমণকারী ও প্রতিরোধকারী— দু’টি বাহিনী তৈরি করা হয়েছে। দু’দেশের বিমান সম্পর্কে উভয় পক্ষই সব ধরনের জ্ঞান অর্জন করছে। পানাগড়ে ভারতীয় বায়ুসেনার বিশেষ বাহিনী ‘গরুড়’-এর জওয়ানদের সঙ্গেও বিভিন্ন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলার মহড়া চালাচ্ছে মার্কিন বায়ুসেনার বিশেষ বাহিনী।