রেড রোডের মঞ্চে খতিয়ে দেখা হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র।
আজ স্বাধীনতা দিবসের সকালে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের লনে কেন্দ্রীয় সরকারি অনুষ্ঠানের জন্য শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে দেওয়া হল রেড রোডে রাজ্য সরকারের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান। ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যপাল তথা ভিক্টোরিয়ার ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের। আর রেড রোডে রাজ্য সরকারের আয়োজিত কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের ঘোষিত অনুষ্ঠানের সময় শেষ মুহূর্তে বদলে দেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন বলে প্রশাসনের একাংশের অভিমত।
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে মমতা রেড রোডে ১৫ অগস্টের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান চালু করেছেন মমতা। তবে করোনা আবহে গত বারের মতোই এ বারও কেউ আমন্ত্রিত থাকবেন না। মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করা হবে। তাতে মূলত থাকবে সরকারের কিছু ট্যাবলো এবং পুলিশের কুচকাওয়াজ।
রাজ্যের এই অনুষ্ঠানে রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানানোর রেওয়াজ নেই। তবে স্বাধীনতা দিবসের সকালে রাজ্যপাল ব্যারাকপুরের গাঁধীঘাটে যান এবং মেয়ো রোডে মহাত্মা গাঁধীর মূর্তিতে মালা দেন। সেই সংক্রান্ত সরকারি ফাইল এ বারও রাজভবনে পৌঁছেছে। সেখান থেকে সরকারকে জানানো হয়, গাঁধীঘাটের অনুষ্ঠান সময়ের মধ্যে শেষ করার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, রাজ্যপালের অন্য কর্মসূচি রয়েছে। কিন্তু ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারকে আলাদা করে জানানো হয়নি বলে নবান্ন সূত্রের দাবি।
রেড রোডে কুচকাওয়াজের নির্ধারিত সময় ছিল সকাল ১০টা। আর ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠান চলার কথা সকাল সাড়ে ন’টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। ইন্ডিয়া ট্যুরিজ়ম এবং দার্জিলিঙের হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনে ভিক্টোরিয়ায় ৭৫০০ বর্গফুটের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং ৭৫০টি চারাগাছ পোঁতা হবে।
এই পরিস্থিতিতে ভিক্টোরিয়ার পাশেই রেড রোডে একই সময় অনুষ্ঠান করার জটিলতার মধ্যে যেতে চায়নি নবান্ন। সূত্রের খবর, বিষয়টি জেনে মুখ্যমন্ত্রী স্থির করেন, ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠান শেষ হলে রাজ্যের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শুরু করা হবে। অর্থাৎ, ১০টার বদলে সাড়ে ১০টায়।
নবান্নের এক শীর্ষকর্তার মন্তব্য, “রাজ্যের এই অনুষ্ঠান নতুন কিছু নয়। এটা সকলেরই বোঝা উচিত ছিল। কিন্তু উপলক্ষ যে হেতু স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন, তাই এ নিয়ে বিতর্ক চাননি মুখ্যমন্ত্রী। বরং তিনি রাজ্যের অনুষ্ঠান পিছিয়ে দিয়ে বার্তা দিতে চেয়েছেন, এ নিয়ে পরে বিতর্ক তৈরি হলে তার দায় রাজ্যের উপর বর্তাবে না।”
সূত্রের খবর, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজ্য জুড়ে কড়া নজর রাখছে প্রশাসন। পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগ বিশেষ সক্রিয় রয়েছে। নবান্ন থেকে জেলায়-জেলায় এ নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশও পৌঁছেছে।