নিজের মোবাইলে লুকিয়ে প্রতিবেশী কিশোরীর পোশাক বদলের ভিডিও তুলেছিল বছর একুশের ছেলেটি। ওই ভিডিও লোকজনকে ডেকে দেখাবে, এই হুমকি দিয়ে মেয়ের মাকে কুপ্রস্তাব দেয়।
ঘটনা জানতে পেরে কেঁদে ভাসিয়েছিল মেয়ে। শেষমেশ অষ্টম শ্রেণির ওই কিশোরীর গলায় দড়ি দেওয়া ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। ধরা পড়েছে অভিযুক্ত সৌমেন হালদার।
ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারের। মেয়েটির মা বলেন, ‘‘কিছু দিন ধরেই কুপ্রস্তাব দিচ্ছিল সৌমেন। থাকে বাড়ির পাশেই। তাই অত গুরুত্ব দিইনি।’’
কিন্তু ঘটনা থেমে থাকেনি সেখানেই। মেয়েটির মা জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ শৌচালয়ে যাওয়ার সময়ে পথ আটকায় সৌমেন। ফের অশালীন প্রস্তাব দেয়। বছর বত্রিশের মহিলা বলেন, ‘‘ওকে বলি, আমি তোর মায়ের বয়সি। কেন এ সব আজেবাজে কথা বলছিস।’’
তাতে একেবারেই দমে যায়নি সৌমেন। বরং নিজের মোবাইল থেকে একটি ভিডিও দেখায়। যা দেখে স্তম্ভিত মহিলা। দেখেন, তাঁরই মেয়ের ছবি। লুকিয়ে যা রেকর্ডিং করেছে সৌমেন। বীরেশ্বরপুর কলেজের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র ওই ভিডিও দেখিয়ে কিশোরীর মাকে বলে, তার কথা মতো ‘কাজ’ না করলে ভিডিও ফাঁস করে দেবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের হাতাহাতি বাধে। মেয়েটি সে সময়ে ঘরেই ছিল। তার মা বললেন, ‘‘বাড়ি ফিরে দেখি, মেয়ের দু’চোখে জল। আমি কিছু ভেঙে বলিনি। তবে মনে হয় ঘর থেকে
সবটা শুনেছিল।’’
বুধবার স্কুলে পরীক্ষা দিয়ে ফিরেছিল মেয়েটি। বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ সে যায় ঝুপড়ি বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে। সেখানে দরমার বেড়া দেওয়া নতুন ঘর বানাচ্ছেন তার বাবা। তিনি পেশায় ট্রেনের হকার। মেয়েটি সাড়ে তিন বছরের ভাইকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিল, ওখানে গিয়ে পড়তে বসবে। খানিক ক্ষণ পরে মা সেখানে গিয়ে দেখেন, ঘরের বাইরে খেলা করছে ছেলে। তবে মেয়ের কোনও সাড়াশব্দ নেই। পরে দরজা ভেঙে উদ্ধার হয় তার দেহ।