রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
দলীয় কর্মীদের দুর্নীতি প্রসঙ্গে মুখ খুলে ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। নিজের বিধানসভা কেন্দ্র খড়দহের সোদপুর ঘোলা মহিষপোতা এলাকার এক দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক। সেখানে হুঁশিয়ারির সুরে তাঁকে বলতে শোনা যায় যে, তাঁর নাম করে তৃণমূলের কেউ নিজের সম্পদ বাড়াক, তা তিনি চান না। দীর্ঘ দিন রাজনীতি করলেও তাঁর নামে কেউ দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে পারেনি, সে কথাও জানিয়েছেন শোভনদেব। দীর্ঘ দিনের রাজনীতিক হিসাবে নিজের ‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তি’কে তুলে ধরে শোভনদেব তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরও স্বচ্ছতার পাঠ দিলেন বলে মনে করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে তাঁর কাজ এবং জীবনযাত্রার মূল্যায়ন করার জন্যও সকলের কাছে কাতর আর্জি জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “আমাকে ব্যবহার করে কেউ সম্পত্তি বাড়াক, সেটা আমি চাই না।” সাম্প্রতিক কালে রাজ্যের শাসক দলের বেশ কয়েকজন নেতানেত্রীর বিরুদ্ধে বিপুল সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। রাজ্যের বহু জনপ্রতিনিধির বাড়িতেই তল্লাশি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং সিবিআই। এই প্রেক্ষিতে শোভনদেবের এই বক্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
দলের কিছু নেতাকর্মীর হঠাৎ সম্পদশালী হয়ে ওঠা নিয়ে ক্ষোভের কথাও শোনা গিয়েছে শোভনদেবের গলায়। তিনি বলেন, “এক জন বাসের কন্ডাক্টর ৫০ বিঘা জমির মালিক হয়ে গেল, এ কখনও সম্ভব?” খড়দহের বিধায়ক হিসাবে তিনি বিধানসভা এলাকার জন্য কাজ করছেন, না কি নিজের সম্পত্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছেন, সে বিষয়ে ভোটদাতাদের নজর রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। জনপ্রতিনিধিদের চালচলন কিংবা সম্পত্তির দিকে নজর না দিলে জনগণ প্রাপ্য অধিকার থেকেও বঞ্চিত হতে পারেন বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন তিনি। তাই, কে টাকা দিচ্ছেন, কেন টাকা দিচ্ছেন সে বিষয়ে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি।