রাজ্যের পরিবহণ দফতরের আয় বেড়েছে। প্রতীকী ছবি।
যারা পথের আইন ভাঙে, তাদের শায়েস্তার সঙ্গে সঙ্গে সেই খাতে আয় বাড়াতে হলে অনেক বেশি করে পথে নামা ছাড়া যে অন্য কোনও উপায় নেই, রাজ্যের পরিবহণ দফতর তার প্রমাণ পাচ্ছে হাতে-হাতে। ওভারলোডিং বা অতিরিক্ত পণ্য বহন এবং নির্দিষ্ট আয়ু পেরোনো গাড়ি চলাচল— মূলত দু’ভাবে পরিবহণ আইন ভাঙার ঘটনা বেশি এবং এই দুই ক্ষেত্রেই কড়াকড়ির কড়ি ভাঁড়ারে তুলছে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন ক্ষেত্রের সম্মিলিত তৎপরতায় গত অর্থবর্ষে পরিবহণ দফতরের আয় ৬৮৯.৩ কোটি টাকা বেড়ে গিয়েছে।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, বিভিন্ন ধরনের গাড়িতে বাড়তি পণ্য বহন বন্ধে রাস্তার নেমে তৎপরতার পাশাপাশি ১৫ বছরের বেশি পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি আটকের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় জরিমানা আর রাজস্ব আদায়—আয় বেড়েছে উভয় ক্ষেত্রেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর ফাঁকির প্রবণতায় রাশ টানার সঙ্গে সঙ্গে কারচুপি করে যথেচ্ছ পণ্য পরিবহণে আগের তুলনায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে বলে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের দাবি।
এর আগে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে পরিবহণ দফতরের মোট আয় ছিল ২৬৬৩.৭ কোটি টাকা। সদ্য শেষ হওয়া ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে তা পৌঁছেছে ৩৩৫৩ কোটি টাকায়। ২০২০-২১ সালের তুলনায় ২০২১-২২ সালে আয় বৃদ্ধির অঙ্ক ছিল ২৯৭.৫ কোটি। সেই নিরিখে গত অার্থিক বছরে দ্বিগুণেরও বেশি হারে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও সামগ্রিক অর্থের পরিমাণের নিরিখে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে ২৬ শতাংশ পর্যন্ত।
পরিবহণ দফতরের এনফোর্সমেন্ট বিভাগ গত অর্থবর্ষে আয় করেছে ১৬৭ কোটি ছ’লক্ষ ৭৫ টাকা। তার আগের বছরে ওই খাতে আয় ছিল ১৩১ কোটি ৫১ লক্ষ ৪৪ হাজার ৮৪৪ টাকা। ওই বিভাগ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জরিমানা থেকে উল্লেখযোগ্য হারে আয় বাড়িয়েছে কলকাতা, বীরভূম, পূর্ব-পশ্চিম বর্ধমান, জলপাইগুড়িতে।
রাস্তায় নেমে ধরপাকড় বাড়ানোয় বৃহত্তর কলকাতা ছাড়াও রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলে ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি চালানোর প্রবণতা তলানিতে এসে ঠেকেছে বলে জানাচ্ছেন দফতরের আধিকারিকেরা। পুরনো গাড়ি চালানো এবং বাড়তি পণ্য বহন ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ফলে নতুন গাড়ি নথিভুক্তি এবং পথকর আদায়ের পরিমাণও বেড়েছে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর।
পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানান, অনলাইনে কর আদায় এবং লাইসেন্স প্রদানের ব্যবস্থা আগের তুলনায় উন্নত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি স্তরে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবহণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত গাড়ি-মালিকদের সময়মতো কর মেটানোর সদিচ্ছাও বেড়েছে। আগের তুলনায় বেড়েছে গাড়ির বিক্রিও। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতির প্রতিফলন ঘটেছে কর আদায়ে।’’