ছবি: সংগৃহীত
এ বছরই প্রথম পৌষমেলায় অনলাইনে স্টল বুকিং চালু হয়েছে। তার জেরেই মেলা থেকে আয় অনেকটা বেড়েছে বলে দাবি করলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর মেলায় সরকারি ভাবে ১২৬১টি স্টল হয়েছিল। এ ছাড়াও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মিলে মোট ৩০০০-এর বেশি স্টল বসেছিল। সব মিলিয়ে গত বছর পৌষ মেলায় স্টল থেকে ভাড়া বাবদ শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের আয় হয়েছিল ৭৮ লক্ষ টাকা। মেলার আয়োজনে বিভিন্ন খাতে খরচ হয়েছিল ৯৪ লক্ষ টাকা। তাই আয়ের তুলনায় ব্যয় ছিল অনেকটাই বেশি। এ বছরই প্রথম পৌষ মেলায় স্টল বুক করার ক্ষেত্রে অনলাইন প্রক্রিয়া চালু করা হয়।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, এ বার মেলায় অনলাইনে স্টল বুক করেছিলেন এক হাজারের বেশি কিছু দোকান ব্যবসায়ী। এ ছাড়াও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০০। বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, এ বছর মেলার মাঠের জায়গার ভাড়া ও সিকিউরিটি মানি নিয়ে মোট আয় হয়েছে ২ কোটি ১৫ হাজার টাকা। যা বিগত বছরগুলির তুলনায় অনেকটাই বেশি। এর মধ্যে সিকিউরিটি মানি ফেরত ও মেলার আয়োজনে বিভিন্ন খাতে খরচ বাদ দিয়েও এ বছর অনেকটাই আয় বেশি হবে বলে আশা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। বিশ্বভারতীর যুগ্ম কর্মসচিব সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘গত বছর ১৬ লক্ষ টাকা ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল বিশ্বভারতীকে। গত বছরের তুলনায় এ বছর অনলাইনে স্টল বুক করার ক্ষেত্রে অনেক বেশি আয় হবে বলে আমরা আশা করছি।’’
এ বছরের আগে অবধি পৌষমেলায় অনলাইনে স্টল বুক করার ব্যবস্থা চালু করা যায়নি। পুরনো রসিদ দেখিয়েই এতদিন দোকানদারেরা মেলা মাঠে পুরনো জায়গাতেই যে যার মতো স্টল করে বসে পড়তেন। জায়গার দামের মধ্যেও প্রচুর বৈষম্য ছিল বলে অভিযোগ। এর ফলে স্টল বসানোর ক্ষেত্রে একাধিকবার অসাধু ব্যবসায়ী ও কিছু দালাল চক্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে বরাবর। এ বছর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ প্রথম থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলেন পৌষমেলায় স্টল বসানোর ক্ষেত্রে যে আগে একাধিকবার যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তা ঠেকাতে অনলাইনের স্টল বুকিং হবে। সেইমতো এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরে কাছে একটি আবেদন জানিয়েছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশ মতো আইআইটি খড়্গপুরের তৈরি করে দেওয়া সফটওয়্যারের মাধ্যমে এ বছর মেলায় স্টল বুকিং শুরু হয়। বিশ্বভারতীর আয় বাড়লেও খুশি নন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ বলেন, ‘‘এ বছর এত টাকা দিয়ে স্টল বুক করা সত্ত্বেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও নাগরিকত্ব আইন নিয়ে নানা জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভের জেরে সেভাবে মেলাতে লোক হয়নি। তাই বেচাকেনাও কম হয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীদের অনেকটাই ক্ষতি হয়েছে।’’ মেলা থেকে বর্ধিত আয়ের টাকা বিশ্বভারতীর উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, ‘‘এই মেলা থেকে যা আয় হয়েছে তা বিশ্বভারতীর উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা হবে।’’