পড়ুয়া ঋণ-কার্ড হাতে ছাত্রছাত্রীরা। নেতাজি ইন্ডোরে। ছবি: সুমন বল্লভ
বিভিন্ন স্তরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ঋণ-কার্ড কর্মসূচি চালু করার সময় থেকেই বিভিন্ন ধরনের সমস্যার হচ্ছে এবং কাঙ্ক্ষিত হারে ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় পড়ুয়া ঋণ-কার্ডের সুবিধা পেতে গেলে মা-বাবার আয়ের শংসাপত্রের দরকার নেই বলে বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সুস্পষ্ট বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পড়ুয়া ঋণ-কার্ড কর্মসূচির সূচনা পর্বে কোনও কোনও ব্যাঙ্কের দিক থেকে প্রত্যাশিত সহযোগিতা মিলছে না দেখে খোদ মুখ্যমন্ত্রী তাদের উদ্দেশে অনুরোধ করেছেন বার বার। পড়ুয়া ঋণ-কার্ডের সমস্যা মেটাতে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকেও বারে বারে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করতে হয়েছে। খানিকটা দেরিতে হলেও ব্যাঙ্কগুলি ধীরে ধীরে এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
মমতা এ দিন জানান, ১৩ হাজার ছাত্রছাত্রী ইতিমধ্যে ঋণের ‘প্রভিশনাল’ অনুমোদন পেয়েছেন। তার জন্য খরচ হয়েছে ১২৯৩ কোটি টাকা। তাঁর কথায়, “পড়ুয়া ঋণ-কার্ডের ক্ষেত্রে অনেকে বলছেন, বাবা-মাকে আয়ের শংসাপত্র দিতে হবে। এটা বাজে কথা। এমন কোনও ধারা রাখা হয়নি। তুলে দেওয়া হয়েছে। ভুল বোঝাবুঝির ব্যাপার নেই।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চাকরির পাওয়ার বয়স বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেককে আর্থিক কারণে পড়াশোনা বন্ধ করতে হয়েছে মাঝপথে। তাঁদেরও তো ইচ্ছা করে পড়তে। তাঁদের সুযোগ দিতে ৪০ বছর পর্যন্ত কম সুদে ১৫ বছরের মেয়াদে সহজ ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। ব্যাঙ্কগুলিকে ধন্যবাদ। সমবায় ব্যাঙ্ককে কাজে লাগিয়েছি। ৩০ হাজার পড়ুয়াকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। ১৪ হাজার দেওয়া হচ্ছে। আরও হবে। দ্রুত এটা করতে হবে।”
এই প্রকল্পের প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকারের আমলে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ৮০ লক্ষ কন্যাশ্রী, এক কোটির বেশি সাইকেল, ১৮ লক্ষ ১৬ হাজার ট্যাব, ঐক্যশ্রী তিন কোটি সাত লক্ষ, শিক্ষাশ্রী এক কোটি পাঁচ লক্ষ, স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ ১৪ লক্ষ ৬৫ হাজার পড়ুয়াকে দেওয়া হয়েছে।
বাংলা যে প্রাথমিক-সহ সর্বস্তরের পঠনপাঠনে অগ্রবর্তী, এ দিন আবার তা জানান মুখ্যমন্ত্রী। অন্যান্য বোর্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘আগে সিবিএসই, আইসিএসই-র সঙ্গে আমাদের ছেলেমেয়েদের নম্বরের ফারাক থাকত। এখন নেই। আমাদের ছেলেমেয়েরা অনেক এগিয়ে আছে। প্রাথমিকে এ রাজ্য সেরা। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরেও এই উৎকর্ষ রয়েছে। বেসরকারি কলেজগুলি আগামী দিনে ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারিতে মন দেবে, এটাই চাইব।’’