ইলিশ উৎসব আয়োজনে ব্যস্ত বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পাল। অনুষ্ঠান মঞ্চে রয়েছেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, শ্রেয়া পাণ্ডেরা। ছবি: সংগৃহীত।
আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। সেই আবহে ইলিশ উৎসব করে বিতর্কে জড়ালেন বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল। এই ঘটনায় তিনি সমালোচিত হচ্ছেন দলের অভ্যন্তরে। সোচ্চার বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি। তাঁরা পরেশের এই উৎসবকে ধিক্কার জানিয়েছেন। রবিবার কাঁকুড়গাছি সিআইটি বিল্ডিংয়ের সামনের পার্কে বিধায়ক পরেশ এবং পূর্ব কলকাতা সুভাষ মেলা কমিটির যৌথ উদ্যোগে এই ইলিশ উৎসবের আয়োজন করা হয়।
উৎসবের ২০তম বর্ষে আমন্ত্রিত ছিলেন তৃণমূলে বহু প্রথম সারির নেতা। আমন্ত্রণ পেয়েও আসেননি উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর বিধায়ক স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নাম কার্ডে থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন তিনিও। আসেননি কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী শশী পাঁজা, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, বিধায়ক মদন মিত্র এবং কুণাল ঘোষ। নিজের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, ‘‘আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মানুষের যে ক্ষোভ, এই সময়ে ইলিশ উৎসব মানা যায় না। সেই কারণেই আমি যাইনি।’’ সুজিতের ব্যাখ্যা, ‘‘প্রয়াত ফুটবলার শৈলেন মান্নার জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল। আরও কিছু রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকায় আমি যাইনি।’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কুণাল বলছেন, ‘‘এটা ইলিশ উৎসবের সময় নয়।’’ সেই কারণেই কি আপনি যাননি? জবাবে সুজিত বলেন, ‘‘আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’
কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ তাঁর ফেসবুকে ইলিশ উৎসবের কার্ড এবং ছবি পোস্ট করে তীব্র সমালোচনা করেন। সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘‘সারা রাজ্য উত্তাল, সর্বত্র হয় শোকের, নয় ক্রোধের পরিবেশ, আর কিছু তৃণমূলের নির্লজ্জ নেতা মমতা-অভিষেক আর ইলিশ মাছের ছবি একসঙ্গে দিয়ে ‘ইলিশ উৎসব’-এর নামে ফুর্তি করছেন। আপনাদের ধিক্কার জানাই।’’ সজলের আক্রমণ নিয়ে পরেশের জবাব, ‘‘সজল একটা উকুন। তাই ওর কথার জবাব দেব না।’’ এরপরেই প্রশ্ন করা হয়, কুণাল ঘোষও এটা ইলিশ উৎসবের সময় নয় বলেছেন। এমন কথা শোনামাত্রই ফোন কেটে দেন বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক।
তবে ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, মানিকতলার বিধায়ক সুপ্তি পাণ্ডে ও তাঁর কন্যা শ্রেয়া পাণ্ডে, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য রাউত এবং তৃণমূল নেতা সঞ্জয় বক্সীরা অবশ্য ইলিশ উৎসবে শামিল হয়েছিলেন।