কুন্তল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতিতে তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুব নেতা কুন্তল ঘোষ এখন জেলে।
সম্প্রতি আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই।
সেখানে তদন্তকারী অফিসারের অভিযোগ, প্রাথমিকের নিয়োগের ক্ষেত্রে যে ‘এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি’-কে প্রার্থীদের ওএমআর শিট তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিল শিক্ষা দফতর, তাদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন ছিল কুন্তলের। তদন্তকারীদের অভিযোগ, যে সব প্রার্থী টেট-এ পাশ করতে পারেননি, তাঁদের কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়ে চাকরির আশ্বাস দিয়েছিলেন কুন্তল-সহ অনেকেই।
চার্জশিটে সিবিআইয়ের দাবি, সেই সব প্রার্থীদের নাম সফলদের তালিকায় ঢোকাতে কুন্তলের মোবাইল থেকে ওই ভুয়ো ওয়েবসাইট বানানো হয়। তার রেজিস্ট্রেশনও করানো হয়। এরপর ওই ওয়েবসাইটে অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা উত্তীর্ণ হিসেবে প্রস্তুত করা হয়। সিবিআই সূত্রের দাবি, কুন্তলের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে এস বসু রায় সংস্থার সঙ্গে সেই আর্থিক লেনদেন হয়েছিল।
তদন্তকারীদের দাবি, টাকা দেওয়ার পরেও চাকরি না পেয়ে কুন্তলের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন অযোগ্য প্রার্থীরা। তখন বাধ্য হয়ে ওই ওয়েবসাইট বানিয়ে অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা বানানো হয়। তদন্তকারীদের দাবি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আদলে ওই ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছিল।
তদন্তকারীদের আরও দাবি, অযোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পরে তাঁদের নাম ওই ভুয়ো ওয়েবসাইটে উত্তীর্ণ হিসেবে নথিভুক্ত করে দেওয়া হত। কুন্তলের পাঠানো নামের তালিকার ভিত্তিতে এস বসু রায় সংস্থার কয়েক জন কর্মচারী ওই কাজ করতেন।
সিবিআই সূত্রের দাবি, জেল হেফাজতে থাকা এস বসু রায় সংস্থার অন্যতম কর্তা কৌশিক মাজি ও প্রোগ্রামার পার্থ সেনের বিরুদ্ধে পেশ করা ওই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটের সাত নম্বর পাতায় কুন্তল ও এস বসু রায় সংস্থার যোগসাজশে ওই ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
তদন্তকারীদের দাবি, এক দিকে ওএমআর শিটের বিকৃতি ঘটিয়ে যোগ্য প্রার্থীদের জায়গায় অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রস্তুত করেছিল এস বসু রায় সংস্থা। অন্য দিকে কুন্তলের মতো মিডলম্যানদের দিয়ে ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরিতেও সাহায্য করেছিল তারা।