মার খেয়েছেন শিক্ষক। পরিচয়পত্র নিয়ে ধস্তাধস্তিতে হাত কাটল অধ্যক্ষের।
কোন্নগরের হীরালাল কলেজের শিক্ষককে মারধর করা হয়েছিল বুধবার। তার পরের দিন, বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে এল হলদিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষকে হেনস্থার ঘটনা। অভিযুক্ত সেই শাসক দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি। অভিযোগ, কলেজে বেআইনি ভাবে টাকা তোলার প্রতিবাদ করায় হেনস্থার স্বীকার হতে হয় হলদিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যদিও এ দিন ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় শোনার পরই ফোন কেটে দিয়েছেন দেবাশিস। পরে ফোন করেও পাওয়া যায়নি তাঁকে। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও।
ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগে। অনলাইনে ভর্তির পরে নথি যাচাই করাতে এবং ক্লাস করতে কলেজে এসেছিলেন প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা। অভিযোগ, সে সময় ‘বহিরাগত’ কয়েকজন টিএমসিপির কর্মী পড়ুয়াদের কাছ থেকে টাকা তোলা শুরু করেন। কলেজ সূত্রের খবর, ঘটনাচক্রে টাকা তোলার সময় ওই বহিরাগতেরা অধ্যক্ষের সামনে পড়ে যান। অধ্যক্ষের হাতে ছিল একটি আইডেনটিটি কার্ড। অভিযোগ, ওই টিএমসিপি কর্মীরা সেই কার্ডটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দেন দেবাশিস। ধস্তাধস্তিতে হাত কেটে যায় তাঁর। রক্ত বেরোতে থাকে। অধ্যক্ষকে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসকের কাছে। কলেজ সূত্রের খবর, এই ঘটনার পরে ওই বহিরাগতেরা ‘অধ্যক্ষ দূর হটো’ বলে কলেজে বেশকিছু পোস্টার লাগায়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়। প্রশাসনের তরফে উদ্যোগ নিয়ে পোস্টার কলেজ থেকে সরানো হয়।
নির্বাচন হয়নি। ফলে অন্য কলেজের মতো এখানেও ছাত্র সংসদ নেই। তবে টিএমসিপির শাখা রয়েছে কলেজে। কলেজের প্রাক্তনী তথা টিএমসিপির ওই কলেজের শাখা সভাপতি শঙ্কর দাস বলেন, ‘‘আমরা বহিরাগত বলে অধ্যক্ষ ঢুকতে দিচ্ছিলেন না। গোলমাল হয়েছিল। হেনস্থা করা হয়নি।’’
অধ্যক্ষকে হেনস্থার ঘটনা নিয়ে বুধবার কলেজের টিচার্স কাউন্সিল নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকার এ দিন বলেন, ‘‘এবার ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে অনলাইন করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বারবার এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করে দিয়েছেন। কিন্তু ভর্তির পরে কলেজে গেলে পড়ুয়াদের এমন ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। নিগ্রহ করা হচ্ছে অধ্যক্ষকে। এ মেনে নেওয়া যায় না’’