প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহে কোনও মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকেন, সেই জন্য এগিয়ে এল মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জের থানা পাড়ার পুজো কমিটি। মাত্র এক টাকার বিনিময়ে পেট পুরে ভাত, ডাল, তরকারি ও সঙ্গে একটি মিষ্টি দেওয়া হচ্ছে। করোনা-বিধি মানা ছাড়া অন্য কোনও শর্ত নেই। পুজো কমিটির কাছ থেকে যাঁরা সকালে কুপন সংগ্রহ করছেন, সকলেই একই খাবার পাচ্ছেন।
করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে জনজীবনে একাধিক নিয়ন্ত্রণ জারি করেছে রাজ্য সরকার। বাজার আংশিক সময়ের জন্য খোলা। ট্রেন বন্ধ। তাতে রুজি হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। করোনা আবহে কাজ বন্ধ থাকায় ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে এসেছেন বা আসছেন। এখানে এসে তাঁদের অনেকের তিন বেলা দূরে থাক, এক বেলার খাবার জোগাড় করাই প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার থেকে থানা পাড়া পুজে কমিটি সেই অভুক্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন। সকাল ৮টা
থেকে ১০টার মধ্যে মাথা পিছু এক টাকার বিনিময়ে কুপন সংগ্রহ করে দুপুরে সেই কুপন দেখিয়ে খাবার নিতে হবে। প্রথম দিনেই প্রায় একশো জনকে তাঁরা খাবার দিয়েছেন।
পুজো কমিটির সদস্য রামকৃষ্ণ সিংহ বলেন, ‘‘নিরামিষ খাবারই হবে। সঙ্গে থাকবে চাটনি, রসগোল্লা। তরকারি এক এক দিন এক এক রকম হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা নাম ঠিকানা এ সব কিছুই দেখছি না। সকলেই খাবার পাবেন। একটা করে টাকা নেওয়া হচ্ছে ইচ্ছে করে, যাতে কেউ নিজেকে ছোট না ভাবেন। তাঁরা যেন মনে করেন, তাঁরা পয়সা দিয়ে কিনেই খাচ্ছেন।’’
এই ব্যয়ভার মেটাচ্ছেন কী করে? রামকৃষ্ণ বলেন, ‘‘আমাদের পুজো কমিটির একটি ট্রাস্ট রয়েছে। ট্রাস্টের টাকা থেকেই খাবার দেওয়া হচ্ছে। আমরাও প্রয়োজন মতো চাঁদা দিচ্ছি।’’ পুজো কমিটির বক্তব্য, যত মানুষ খাবার নিতে আসুন, খাবার দেওয়া হবে। কিন্তু সকলকেই মাস্ক পরতে হবে। খাবারের জায়গায় থাকছে পর্যাপ্ত স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা। এ দিন পেট পুরে খাওয়ার পরে স্থানীয় বাসিন্দা নওশাদ শেখ বলেন, ‘‘হকারের কাজ করতাম। সে কাজ তো এখন বন্ধ। খুব চিন্তায় ছিলাম। যাক, এখানে এক বেলার খাবারের ব্যবস্থা তো অন্তত হল!’’