বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। —ফাইল ছবি।
আরজি করের আন্দোলনের আবহে তাঁর বিরুদ্ধে ‘দাদাগিরি’, ‘থ্রেট কালচার’ চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। তার ভিত্তিতে তাঁকে সাসপেন্ডও করেছিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) কলকাতা শাখা। অভিযুক্ত সেই চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে বৃহস্পতিবার ক্লিনচিট দিল আইএমএ! বিরূপাক্ষকে সাসপেন্ড করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলকাতা শাখা, তা ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে খারিজ করে দিল তারা।
আইএমএ জানিয়েছে, রাজ্য শাখার এক্তিয়ারই নেই কাউকে সাসপেন্ড করার। কাউকে সাসপেন্ড করতে হলে আইএমএ সদর দফতরের অনুমোদন প্রয়োজন। বিরূপাক্ষের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। সেই কারণেই ওই সাসপেনশনের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করেছে আইএমএ।
আইএমএ-র ওই সিদ্ধান্তের পরেই বিরূপাক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ নাগরিক ও এক জন চিকিৎসক হিসাবে বিচার চেয়েছিলাম। নিয়ম-আইনের ঊর্ধ্বে উঠে মুষ্টিমেয় কিছু চিকিৎসক আমার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছিলেন। তা একেবারেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছিল। যার জন্য আমায়, আমার ডাক্তারবন্ধুদের (সিনিয়র ও জুনিয়র) সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এর মধ্যেও আশা করব যাতে অভয়া বিচার পান। রাজ্য সরকার, তদন্তকারী সংস্থা ও আদালতের উপর পূর্ণ আস্থা আছে।’’
আরজি কর-কাণ্ডের আবহে একটি অডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল (যদিও সেই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তার সূত্র ধরেই উঠে এসেছিল বর্ধমান মেডিক্যালের প্যাথোলজি বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট বিরূপাক্ষের নাম। দাবি করা ছিল, সেই অডিয়োতে যে কণ্ঠস্বর শোনা গিয়েছে, তা বিরূপাক্ষের। অডিয়োয় বিরূপাক্ষকেই ‘হুমকি’ দিতে শোনা গিয়েছে। এর পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে হাসপাতালে ‘দাদাগিরি’, হুমকি-প্রথা চালানোর অভিযোগ উঠতে শুরু করে। শুধু তা-ই নয়, ৯ অগস্ট আরজি করের সেমিনার হল থেকে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর সেখানে বিরূপাক্ষের ‘উপস্থিতি’ নিয়েও নানাবিধ প্রশ্ন উঠেছিল। এর পরেই বিরূপাক্ষকে সমস্ত কাজকর্ম থেকে সরানোর নির্দেশিকা জারি করে কাউন্সিল। তাঁকে সাসপেন্ড করেছিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর এবং আইএমএ-র কলকাতা শাখা।
এখন আরজি কর আন্দোলন স্তিমিত। নিস্তরঙ্গ। সেই আবহে গত সোমবারই বিরূপাক্ষকে মেডিক্যাল কাউন্সিলের বৈঠকে দেখা গিয়েছে। যার অর্থ, আরজি করের সময় বিরূপাক্ষের বিরুদ্ধে যে নির্দেশ জারি করেছিল কাউন্সিল, তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এ বার বিরূপাক্ষের সাসপেনশন বাতিল করল আইএমএ-ও।