মহম্মদ ইজাজ ওরফে ইজাজ আহমেদ।—ফাইল চিত্র।
লাগাতার ধরপাকড়ের জেরে এ রাজ্যে জেএমবি বা জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছিল। ভেঙে গিয়েছিল জেহাদি কাজের জন্য গড়ে তোলা মুর্শিদাবাদ বা ধুলিয়ান মডিউল। দুর্বল হয়ে যাওয়া সংগঠনকে চাঙ্গা করতে উত্তরবঙ্গকেই বেছে নিয়েছিল এ দেশে জেএমবি-র আমির বা চাঁই মহম্মদ ইজাজ ওরফে ইজাজ আহমেদ।
সংগঠনের পুনর্গঠনের কাজে গত বছরের শেষ থেকে উত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘনঘন যাতায়াত করত ইজাজ। কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফের হাতে ধরা পড়া ওই জঙ্গি জেরায় গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, উত্তর দিনাজপুর সংলগ্ন এলাকাকে বেছে নিয়ে নতুন একটি মডিউল গড়ে তোলা হয়েছিল। এ রাজ্যের সংগঠন দেখভাল করতে এক জনকে বেছে নিয়ে তাকেই সব নির্দেশ দিত ইজাজ। সে এ রাজ্যে শেষ এসেছিল তিন মাস আগে। গত সোমবার ভোরে গয়া থেকে ইজাজকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নিয়ে আসেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দাদের দাবি, গয়ায় লুকিয়ে থাকলেও পশ্চিমবঙ্গে সংগঠনকে শক্তিশালী করার কাজ থেমে ছিল না। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল জেএমবি-র নতুন মডিউল। ওই মডিউলই বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণ ঘটায়। ইজাজ সেই মামলাতেও অভিযুক্ত। বস্তুত গয়া বিস্ফোরণের ছক সে-ই কষেছিল। এসটিএফ জানায়, কওসর-সহ জেএমবি-র প্রথম সারির বেশির ভাগ নেতা গ্রেফতার হয়ে যাওয়ায় তাদের কার্যকলাপে ভাটা পড়েছিল। তাই উত্তরবঙ্গ মডিউলের জন্য সীমানাবর্তী উত্তর দিনাজপুরকে বেছে নেওয়া হয়।
গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দিতে ট্রেনে গয়া থেকে কাটিহার হয়ে বিহারের লাগোয়া উত্তর দিনাজপুরের মফস্সলে পৌঁছে যেত ইজাজ। সেখানে মূলত ‘দাওয়াত’ বা খাওয়াদাওয়ার নিমন্ত্রণ জানানোর সঙ্গে চলত ধর্মীয় প্রচার। কিন্তু এক বছর আগে কওসর ধরা পড়ার পরে তাতে ভাটা পড়ে। গোয়েন্দারা জানান, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে খুব সম্ভবত চলতি বছরেই বাংলায় ফের জঙ্গি প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল।
এসটিএফ সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ওই মডিউলের সঙ্গে যুক্ত অন্তত ১২ জনের নাম জানা গিয়েছে। তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে।