নবান্ন। — ফাইল চিত্র।
অবসর নিতে এখনও বাকি প্রায় পাঁচ বছর। এই সময়েই স্বেচ্ছাবসর দিতে চেয়ে আবেদন রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছেন পুলিশ কর্তা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসূন এখন আইজি (রায়গঞ্জ) পদে কর্মরত। সূত্রের দাবি, সম্প্রতি তিনি নবান্নে স্বেচ্ছাবসরের যে আর্জি পাঠিয়েছেন, তা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে তৎপর হয়েছে প্রশাসনের একাংশ। তাই মনে করা হচ্ছে, লোকসভা ভোটে শাসকদল প্রসূনকে প্রার্থী করতে পারে। সেই কারণেই সম্ভবত ভোট ঘোষণা হওয়ার আগে স্বেচ্ছাবসরের প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। তবে এই বিষয়ে প্রসূনের থেকে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্বেচ্ছাবসর নিয়ে ভোটে লড়ার উদাহরণ কম নেই অন্তত এ রাজ্যে। গত বিধানসভা ভোটে চন্দননগরের কমিশনার থাকাকালীন হুমায়ুন কবীর চাকরি ছেড়ে শাসক দলের টিকিটে ভোটে লড়েছিলেন। জিতে মন্ত্রীও হয়েছিলেন তিনি। সেই দিক থেকে প্রসূনের অবস্থান নতুন নয়। তবে আধিকারিকদের অনেকে বিস্মিত তাঁর চাকরি ছাড়ার সময় নিয়ে। কারণ, ২০০৭ ব্যাচের আইপিএস (ডব্লিউবিপিএস থেকে আইপিএস হয়েছিলেন) প্রসূনের অবসর নেওয়ার কথা ২০২৯ সালের অক্টোবর মাসে। প্রাক্তন পুলিশকর্তা হুমায়ুন চাকরি ছেড়ে ভোটে লড়লেও, তা ছিল তাঁর অবসরের কাছাকাছি।
প্রশাসনিক সূত্র দাবি করছে, প্রসূনের চাকরি জীবনের বেশির ভাগ সময়টাই তিনি কাটিয়েছেন দুই দিনাজপুর সংলগ্ন এলাকায়। দক্ষিণ দিনাজপুরে তিনি দু’দফায় পুলিশ সুপারও ছিলেন। ফলে এক জন সরকারি আধিকারিক যে এলাকায় এত দীর্ঘ সময় ধরে কর্মরত ছিলেন, তাঁর চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত স্বাভাবিক ভাবেই সেই এলাকার (বালুরঘাট) লোকসভা আসনটিকে ঘিরে নতুন জল্পনা উস্কে দিচ্ছে। প্রসঙ্গত, ওই আসনে জিতে গত বার সাংসদ হয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আসন্ন ভোটেও সেই আসন থেকেই তাঁকে প্রার্থী করেছে বিজেপি।
অভিজ্ঞ আমলাদের অনেকে জানাচ্ছেন, অতীতে অনেক আইএএস এবং আইপিএস অফিসারই শাসকদল তৃণমূলের টিকিটে বিভিন্ন ভোটে লড়েছিলেন। তবে আইএএস-দের তুলনায় বেশি লড়েছেন আইপিএস-রা। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের হয়ে ভোটে লড়েছিলেন হায়দর আজিজ সফি, সুলতান সিংহ, রচপাল সিংহ, চৌধুরীমোহন জাটুয়া, উপেন বিশ্বাস। আবার প্রাক্তন আইএএস-দের মধ্যে ছিলেন মণীশ গুপ্ত। পরে জহর সরকারকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিল তৃণমূল।