Nabanna

ব্যয়-অনুমানে ত্রুটি হলে শাস্তি, বার্তা পূর্ত বিভাগে

পূর্তমন্ত্রী, পূর্তসচিবের উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে রাজ্যের সব এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে বলা হয়েছে, কোনও প্রকল্পেরই ‘রাফ এস্টিমেট’ বা খসড়া ব্যয়ানুমান তৈরি করে টাকা চাওয়া যাবে না।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০ ০৫:৪৮
Share:

নবান্ন।

পরপর কয়েকটি প্রশাসনিক বৈঠকে পূর্ত দফতরের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ করে কোনও একটি কাজের জন্য বিশাল অঙ্কের ‘এস্টিমেট’ বা ব্যয়-অনুমান তৈরি করা, সেতু রক্ষণাবেক্ষণ এবং সময়মতো কাজ শেষ না-করার
প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রীর উষ্মার মুখে পড়েছেন পূর্তকর্তারা। ২৪ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পূর্ত ইঞ্জিনিয়ারদের ডেকে ৩৫ দফা নির্দেশিকা দিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। যার নির্যাস: সময়ে কাজ শেষ না-হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে ইঞ্জিনিয়ারদের। যে-কোনও প্রকল্পের ব্যয়ানুমান তৈরির ক্ষেত্রেও নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা।

Advertisement

পূর্তমন্ত্রী, পূর্তসচিবের উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে রাজ্যের সব এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে বলা হয়েছে, কোনও প্রকল্পেরই ‘রাফ এস্টিমেট’ বা খসড়া ব্যয়ানুমান তৈরি করে টাকা চাওয়া যাবে না। সেই জন্য পুরনো সব প্রকল্পের ব্যয়ানুমান ফিরিয়ে নিয়ে নতুন করে তা
তৈরি করতে হবে। এর পর থেকে কোনও প্রকল্পের ব্যয়ানুমান এক বার তৈরি হয়ে গেলে আর ‘রিভাইজ়ড এস্টিমেট’ বা সংশোধিত ব্যয়ানুমান তৈরি করা যাবে না। যে-দরপত্র
চূড়ান্ত হবে, তাতে উল্লিখিত অঙ্কের চেয়ে বেশি টাকাও চাওয়া যাবে না বলে পূর্তকর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রী ও সচিব।

কোনও কোনও প্রকল্পের জন্য বাড়তি টাকা চেয়ে দরবার করছেন অনেক ইঞ্জিনিয়ার। দরপত্রে উল্লিখিত কাজেরও অদলবদল হচ্ছে। জানতে চাইলে অনেক সময় শোনা যাচ্ছে, নবান্নের শীর্ষ কর্তাদের মৌখিক নির্দেশে এমন সিদ্ধান্ত। ইঞ্জিনিয়ারদের বৈঠকে ডেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কারও মৌখিক নির্দেশে কোনও কাজ বদলানো বা বাড়তি খরচ চাওয়া যাবে না। পূর্তমন্ত্রী বা পূর্তসচিবও যদি কিছু করার জন্য মৌখিক
নির্দেশ দেন, তা ইঞ্জিনিয়ারদের অগ্রাহ্য করতে বলা হয়েছে। ৪ ডিসেম্বর ব্যয়ানুমান তৈরির ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশিকা দেয় পূর্ত দফতর। তার
পরে তৈরি কোনও ব্যয়ানুমান নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারকে শাস্তি পেতে হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের যাবতীয় ব্যবস্থাপনা করে থাকে পূর্ত দফতর। প্যান্ডেলও তৈরি করতে হয় ওই দফতরকে। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য কাজের দরপত্র চায় দফতর। বৈঠকে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকগুলিকে মুখ্যমন্ত্রীর সফর বলে বলা যাবে না। সেগুলি সব দফতরের পর্যালোচনার জন্য। সেই ভাবেই দরপত্র চাইতে বলেছে দফতর।

জেলাগুলিকে শীর্ষ পূর্তকর্তাদের নির্দেশ, ৩১ মার্চ যে-সব কাজ শেষ হওয়ার কথা, তা যেন সময়ের মধ্যেই শেষ হয়। যদি শেষ না-হয়, তা হলে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারদের কারণ ‘শো-কজ়’ বা দর্শানোর নোটিস ধরানো হবে। রাজ্যের অতি বিপজ্জনক ৩৭৪টি সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন,
অথচ মাত্র ২৫০টি সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষার রিপোর্ট পেয়েছে সরকার। পূর্তমন্ত্রী ও পূর্তসচিব এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পূর্ত দফতরের হাতে রাস্তা মেরামতের কাজের চাপ বেড়ে গিয়েছে।
কারণ, পঞ্চায়েতের অনেক রাস্তাও পূর্তের হাতে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী ও সচিব নির্দেশ দিয়েছেন, আরও কোনও নতুন রাস্তার ভার পূর্ত দফতর নেবে না। এই মর্মে তৃণমূল স্তর থেকে আর যাতে কোনও প্রস্তাব না-আসে, তা দেখতে বলা হয়েছে। কাজের শেষে তা ‘উত্তম’ মানের হলেই বিল মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছে ইঞ্জিনিয়ারদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement