প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণ ভারতে ছড়িয়ে পড়ার শুরুর দিকে চলছিল বিভিন্ন বোর্ডের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা। কিন্তু সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করায় তা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় তিন মাস পরেও পরীক্ষাগ্রহণ সম্পূর্ণ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আইসিএসই বোর্ড দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির বাকি পরীক্ষা ঐচ্ছিক করে দিয়েছে। বোর্ড জানিয়েছে, কোনও পরীক্ষার্থী বাকি পরীক্ষা দিতে পারে আবার না-ও দিতে পারে। কেউ পরীক্ষা না-দিলে স্কুলের প্রি-বোর্ডের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরই চূড়ান্ত নম্বর হিসেবে গণ্য হবে। আইসিএসই বোর্ড পরিচালিত কয়েকটি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তাঁদের অধিকাংশ পড়ুয়াই পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক। কিন্তু করোনা সংক্রমণ নিয়ে সংশয় না-কাটায় সেই পরীক্ষার্থীদের অনেকেই দোলাচলে ভুগছে।
পরীক্ষার্থীরা জানাচ্ছে, তাদের মনে ঘুরছে নানা প্রশ্ন। আইসিএসই বোর্ডের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির বাকি পরীক্ষা চলাকালীন যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে বা তার বাড়ির এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন হয়ে যায়, তা হলে পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে কী হবে? অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, এই প্রশ্নের উত্তর না-মেলায় ইচ্ছে থাকলেও বোর্ডের পরীক্ষায় বসা নিয়ে দ্বিধায় ভুগছে অনেক পরীক্ষার্থী।
হাওড়ার মৌড়িগ্রামের বাসিন্দা, দশম শ্রেণির এক পরীক্ষার্থী জানাচ্ছে, সে প্রি-বোর্ডে যে নম্বর পেয়েছে তার থেকে বেশি নম্বর বোর্ডের পরীক্ষায় পাবে বলে তার বিশ্বাস। তাই সে বাকি তিনটি পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক। কিন্তু তার প্ৰশ্ন, একটি বা দু’টি পরীক্ষা বাকি থাকার সময়ে কোনও কারণে যদি সে পরীক্ষা দিতে না-পারে সে ক্ষেত্রে কি ওই বিষয়গুলিতে প্রি-বোর্ডের নম্বরই গণ্য হবে? ওই পরীক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ‘‘এর উত্তর স্কুল কর্তৃপক্ষ দিতে পারেননি। তাই আমার মেয়ে বাকি পরীক্ষা দেবে কি না, সেই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। কারণ, হাওড়ায় করোনা সংক্রমণের যা পরিস্থিতি তাতে পরীক্ষা চলাকালীন অবস্থার অবনতি হওয়া অস্বাভাবিক নয়।’’ একই প্রশ্ন নিয়ে অভিভাবক এবং পরীক্ষার্থীরা শুক্রবার নিজেদের স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুল থেকে সদুত্তর মেলেনি। শুধু বলা হয়েছে, এই বিষয়ে বোর্ড যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা-ই হবে। এক অভিভাবকের বক্তব্য, ‘‘বাকি পরীক্ষা সামনের মাসের গোড়াতেই শুরু হওয়ার কথা। আর কবে সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ড?’’
আইসিএসই বোর্ডের সচিব জেরি অ্যারাথুন জানিয়েছেন, বাকি পরীক্ষা কী ভাবে হবে সেই বিষয়টি এখনও আদালতে বিচারাধীন। তাই এখনই সবটা বলা যাচ্ছে না। তবে তাঁর আশ্বাস, ‘‘দু’-তিন দিনের মধ্যেই পুরো ছবিটি পরিষ্কার হয়ে যাবে। পরীক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই।’’