তপন এবং প্রতিমা দত্ত। ফাইল চিত্র।
হাই কোর্টের রায় শুনে তাঁর প্রথম প্রতিক্রিয়া— ‘‘এ বার মনে হচ্ছে অপরাধীরা শাস্তি পাবে।’’ এর পর তিনি বললেন, ‘‘প্রশাসনের গালে আমি সপাটে একটা চড় মারতে পেরেছি।’’ তিনি ১১ বছর আগে বালির নিহত তৃণমূল নেতা তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। যে খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ।
প্রতিমার বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেন, গত ১১ বছর পুলিশের নির্দেশে কার্যত বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ করে কাটাতে হয়েছে তাঁকে। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি ঘরে বন্দি। আমার মেয়েরা ঘরে বন্দি। অথচ আমি দেখেছি খুনিরা জামার বোতাম খুলে রাস্তায় ঘুরছে।’’ সিবিআইয়ের প্রতি তাঁর আস্থা রয়েছে জানিয়ে প্রতিমা বলেছেন, ‘‘হয়তো আরও একটু দেরি হবে। আরও চার-পাঁচ বছর লাগবে, তাতে আমার অসুবিধা নেই। দোষীদের শাস্তি দিয়েই ছাড়ব।’’
২০১৫-য় তাঁর স্বামীকে খুনের ঘটনায় শেষ পাঁচ অভিযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পাওয়ার পর প্রতিমা বলেছিলেন, ‘‘এই সরকারের (রাজ্য) সিআইডির উপর আমার কোনও আস্থা নেই। দোষীদের শাস্তির জন্য সিবিআইকে তদন্তের ভার দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’ অবশ্য তার তিন বছর আগেই সিআইডি তদন্তের ‘গতিপ্রকৃতি’ দেখে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান প্রতিমা। ২০১২ সালে সিবিআই চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন।
তাঁর কথায়, সিআইডি তদন্ত কেমন হচ্ছে, আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি। আমি যখন দ্বিতীয় চার্জশিট দেখলাম, তখনই বিষয়টি আমার কাছে স্পষ্ট হয়।’’ মামলার তদন্তকারীদের নিরন্তর চাপের মুখে থাকতে হয়েছে বলে দাবি করে প্রতিমা বলেন, ‘‘মামলার আইও-র (তদন্তকারী অফিসার) ডিমোশন (পদাবনতি) হয়েছিল।’’
শুধু ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে থাকাই নয়, ২০১৬ সালে ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস ও বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার করার পরে শাসক দলের রোষের শিকার হয়েছিলেন বলে আগেই অভিযোগ করেছিলেন নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রী। ২০১৭ সালে কেবল তার চুরির মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ! জেলেও যেতে হয়েছিল। প্রতিমার অভিযোগ ছিল, রাজ্যের মন্ত্রী তথা হাওড়া জেলা তৃণমূলের নেতা অরূপ রায়ের চক্রান্তেই এমনটা ঘটেছে। বৃহস্পতিবারও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, সিআইডির প্রথম চার্জশিটে অরূপের নাম থাকলেও পরে কেন বাদ দেওয়া হল?
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।