তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। — ফাইল চিত্র।
দলে অনেকের থেকে বেশি যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি। এমনটাই অভিযোগ করলেন তৃণমূলের বিধায়ক তাপস রায়। মদন মিত্রকে নিয়ে তৈরি হওয়া অস্বস্তির মধ্যেই এমন মন্তব্য প্রবীণ রাজনীতিকের। রবিবার বরানগরে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের একটি রক্তদান শিবিরের মঞ্চে তিনি বলেন ‘‘যে নতুন প্রজন্ম উঠে এসেছেন, তাঁরা লোকসভা, রাজ্যসভার সাংসদ হচ্ছেন, মন্ত্রী, বিধায়ক, মেয়র, চেয়ারম্যান হয়েছেন, এঁদের সকলের যে যোগ্যতা আছে, তা আমি মনে করি না।’’ সঙ্গে তাপস আরও বলেন, ‘‘দল সমস্ত দিকে নজর রাখছে সকলে জায়গা পাবে না। আমারও মন্ত্রীসভায় জায়গা হয়নি। যোগ্যতায় আমার ধারেকাছে নেই, তাঁরাও সব মন্ত্রী হয়েছেন।’’
যদিও সোমবারই তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাপস। তাঁর কথায়, ‘‘আমার কথার অপব্যাখ্যা হচ্ছে। আমি বলেছি মন্ত্রীসভা বা দলের পদে কাস্ট, জেলা এ রকম অনেক ডিভিশন থাকে, সব সময় সব যোগ্য লোককে পদ দেওয়া যায় না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার বিধানসভা কেন্দ্রের মহিলা সংগঠনের সভাপতি পদ নিয়ে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। সকলেই সভানেত্রী হতে চাইছেন। তাঁদের বোঝাতে গিয়েই আমি বলেছি, ভোটে টিকিট পেলেই দল করব। আর না পেলেই করব না। দলের পদ পেলেই, দল করব, আর না পেলে করব না। এটা হয় না। তাই সবাইকে পদ বা টিকিটের ঊর্ধ্বে উঠে দল করতে বলেছিলাম। সঙ্গে বলেছি, দল সব কিছুর উপরে নজর রাখছে। আমার বক্তব্যের যেমন ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, আদৌ বিষয়টি তেমন নয়।’’
তাপসের উত্থান ৮০-র দশকের ছাত্র রাজনীতি থেকে। কখনও হয়েছেন কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর, কখনও আবার হয়েছেন বিধায়ক। কংগ্রেস জমানা থেকেই তাঁর জনপ্রতিনিধি হওয়া। ২০০১ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন তিনি। ২০১১ সালে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বরানগর থেকে প্রার্থী করা হয় তাঁকে। ২০১৬ সালে বরানগর থেকে দ্বিতীয় বার জয়ী হলে তাঁকে বিধানসভার পরিষদীয় দলের উপমুখ্যসচেতক করা হয়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে পরিকল্পনা উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী করা হয়েছিল।
কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর তাঁকে আবারও পরিষদীয় দলের উপমুখ্যসচেতক পদে ফেরানো হয়। সঙ্গে দেওয়া হয় উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্বও। কিন্তু মাত্র আট মাস পর উত্তর কলকাতার তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে ফের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মাস কয়েক আগেই সুদীপের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তাপস। পাল্টা বিবৃতির লড়াইয়ের পর তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে সেই বিবাদ থেমেছিল।