—নিজস্ব চিত্র।
সন্দেহের বশে স্ত্রীকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল স্বামীর বিরুদ্ধে। তিন বছর আগে বাঁকুড়ার শালতোড়া থানার বড়শাল গ্রামের ওই ঘটনায় অভিযুক্ত সেই স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল বাঁকুড়া জেলা আদালত। বৃহস্পতিবার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক। এর পর শুক্রবার সাজা শোনালেন তিনি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালে বাঁকুড়ার মেজিয়া থানার কালিদাসপুর গ্রামের ছায়া বাউরির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল শালতোড়া থানার বড়শাল গ্রামের জপহরি বাউরির। তাঁদের দুই কন্যা-সহ তিন সন্তানও হয়। কিন্তু সংসারে বিবাদ লেগেই ছিল। তার কারণ, স্ত্রীকে সন্দেহের চোখে দেখতেন স্বামী। অভিযোগ, সেই সন্দেহ বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, স্ত্রীকে খুনও করেন তিনি। ছায়ার পরিবারের দাবি, ২০২১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর স্ত্রীকে গ্রাম লাগোয়া ইলামবাজারের জঙ্গলে কাঠ কুড়ানোর নাম করে নিয়ে গিয়ে কুড়ুল দিয়ে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুন করেন জপহরি। এর পর রক্ত লেগে থাকা সেই কুড়ুল নিয়ে বাড়ি ফিরে তিন সন্তানকেও খুন করার হুমকি দেন। সেই সময় স্থানীয়েরাই জপহরিকে আটকান। পরে শালতোড়া থানার পুলিশ এসে তাঁকে গ্রেফতার করেন। প্রায় তিন বছর ধরে সেই ঘটনার বিচার চলছিল বাঁকুড়া জেলা আদালতে।
বাঁকুড়া জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী অরুণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৃতার শরীরে কুড়ুলের কোপের মোট ১১টি চিহ্ন ছিল। যা প্রমাণ করে, অত্যন্ত নৃশংস ভাবে তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল। এই ঘটনায় বাঁকুড়া জেলা আদালতের বিচারক জপহরি বাউরিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছ’মাস কারাদণ্ডও দিয়েছে আদালত।’’ ঘটনার মূল অভিযোগকারী মৃতার দাদা কার্তিক বাউরি বলেন, ‘‘আমার বোনকে যে ভাবে খুন করা হয়েছিল, তাতে আমরা দোষীর ফাঁসি চেয়েছিলাম। আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।’’