ফাইল চিত্র।
অতিমারির দীর্ঘ দাপট বিশেষত নিম্ন বর্গের অসংখ্য মানুষের রুজিরোজগার কেড়েছে, এটা কমবেশি সকলেরই জানা। এ বার এক সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, করোনা আবহে পশ্চিমবঙ্গে গরিবদের আয় ৬৮ শতাংশ কমেছে আর বেড়েছে ক্ষুধার সূচক। এই রিপোর্ট প্রকাশ করে ‘হাঙ্গার ওয়াচ’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, এই পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করে তুলছে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের বেহাল দশা। ওই সংস্থার সমীক্ষায় উঠে এসেছে, কাজ করা সত্ত্বেও প্রচুর মানুষের মজুরি বকেয়া রয়েছে। এর ফলে সমাজের দরিদ্র শ্রেণির উপরে অতিমারি যে-প্রভাব ফেলেছে, তা জটিল থেকে আরও জটিল হয়ে উঠছে। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের রাজনৈতিক তরজাকেও এই অবস্থার জন্য দায়ী করা হয়েছে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই সমীক্ষা-রিপোর্টে।
অতিমারি পরিস্থিতিতে বাংলায় ক্ষুধার সূচক নির্ধারণে দু’দফায় ১৯৯২টি পরিবারের উপরে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। ওই পরিবারগুলির দুই শতাংশের মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকা বা তার কিছু বেশি। বাকি ৯৮ শতাংশের মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকার কম। বিভিন্ন ধর্ম, জাতি এবং জনজাতি ছাড়াও এই সমীক্ষায় যৌনকর্মী এবং চা-বাগানের কর্মী-শ্রমিকদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অতিমারির আগ্রাসনে যৌনকর্মী, চা-বাগানের শ্রমিকেরা কাজ হারিয়েছেন বেশি।
সমীক্ষকেরা জানিয়েছেন, দরিদ্র পরিবারগুলির ৮৩% খাবার নিয়ে সুরক্ষাহীনতায় ভুগছে। অনেকেই অতিমারি পরিস্থিতিতে উপোসী থেকেছেন কিংবা আধপেটা খেয়েছেন। দেখা গিয়েছে, ৪১% পরিবারের ১০ হাজার টাকার কম ঋণ রয়েছে। সমীক্ষকদের ব্যাখ্যা, স্বল্প পরিমাণের ঋণ থেকেই বোঝা যায় যে, খাবারের মতো দৈনিক চাহিদা মেটাতেই ওই টাকা ধার করতে হয়েছে। সমীক্ষকেরা আরও জানাচ্ছেন, ওই পরিবারগুলি মনে করে, কোভিড বিদায় নিলেও তাদের কোনও উন্নতি হবে না। সরকার এবং সরকারি প্রকল্পের উপরেও তাদের ভরসা ক্রমশ কমছে।