আবাসে বঞ্চনার অভিযোগও জানান বাসিন্দারা। প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় দলটি এসেছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ির কাজকর্ম পরিদর্শনে। কিন্তু বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরে ভগবানপুর-১ ব্লকে আবাসের কাজ পরিদর্শনে যাওয়ার পথে মহিলা-সহ শ’খানেক বাসিন্দা তাদের গাড়ি আটকান। দাবি তোলেন, একশো দিনের কাজ প্রকল্পের বকেয়া টাকা মেটাতে হবে। আবাসে বঞ্চনার অভিযোগও জানান বাসিন্দারা।
আবাসের কাজ সরেজমিনে দেখতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের তিন সদস্যের দলটি এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরে পৌঁছেছে। দলের সদস্যেরা তমলুকে জেলাশাসকের অফিসে ঘণ্টাখানেক বৈঠকও করেন। পরে সিপিএম জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা। সিপিএম নেতৃত্ব তাঁদের হাতে স্মারকলিপি দেন। অভিযোগ, ওই জেলার ১৪টি ব্লকে ১৭৬৫ জনের পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তাঁদের নাম আবাস প্লাস উপভোক্তা তালিকায় তোলা হয়েছে। অথচ ২৩২৫টি পরিবার কাঁচা বাড়িতে বসবাস করলেও তাদের নাম তালিকায় নেই।
কেন্দ্রীয় দলটি ভগবানপুর-১ ব্লকের পথে বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়ার পরে কাজলাগড় পঞ্চায়েতের কোপ্তিয়া গ্রামে গিয়ে কয়েক জনের মাটির বাড়ি পরিদর্শন করে। ওই সব পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা জানতে চান, বাড়িতে গ্যাসের সংযোগ, মোটরবাইক বা শৌচাগার রয়েছে কি না। খেজুরি-১ ব্লকের লাখি পঞ্চায়েতের বেগুনাবাড়ি ও ঠাকুরনগর গ্রামেও যায় দলটি। ঠাকুরনগরে এক পরিবারের কাছে প্রতিনিধিরা জানতে চান, বাড়ি পেতে কাউকে টাকা দিতে হয়েছে কি না।
রাতে আবাস যোজনার কাজ দেখতে তিন সদস্যের অন্য একটি কেন্দ্রীয় দল মালদহে পৌঁছেছে। দিল্লি থেকে বিমানে বাগডোগরা হয়ে সড়কপথে দলটি ওই জেলায় পৌঁছয়। মালদহের প্রশাসনিক ভবনে রাতেই জেলা ও ব্লক কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা।
শুধু বাড়ি তৈরি নয়, সেখানে বসবাসের জন্য জল-বিদ্যুতের মতো ন্যূনতম ব্যবস্থাও করার কথা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার দ্বিতীয় পর্যায় থেকে এই নীতি নিয়েছে রাজ্য। ব্লক স্তরে সেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি তৈরিতে উপভোক্তারা যাতে অসুবিধায় না-পড়েন, সেই জন্য প্রতি মাসে ব্লক স্তরে ‘সমাধান মেলা’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “বাড়ি তৈরির পরে আলো-জলের মতো প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর ব্যাপারে নজর রাখতে বলা হয়েছে।’’
আবাস যোজনার তদন্তে কেন্দ্রীয় দল উত্তরবঙ্গের অন্য জেলাতেও যেতে পারে, এই সম্ভাবনায় প্রকল্পের চূড়ান্ত তালিকা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন।