রেহাই নেই গাড়িতেও। মালদহে ইশা। নিজস্ব চিত্র
‘দাদা এই কাগজে একটা সই করে দিন না!’—চায়ের দোকান থেকে দলীয় কর্মসূচি, সর্বত্রই এখন এই একটা অনুরোধই করা হচ্ছে সুজাপুরের বিধায়ক ইশা খান চৌধুরীকে। ইশার উত্তর, ‘‘এরই মধ্যে ২৫ হাজার আবেদন পত্র জমে গিয়েছে। কবে শেষ করব জানি না।’’
আধার থেকে শুরু করে প্যান কার্ড সংশোধনে প্রচুর আবেদন জমা পড়ছে মালদহে। প্রশাসনের একাংশই জানাচ্ছেন, নতুন নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি আতঙ্কের জেরেই এই ঘটনা ঘটছে। জেলার সুজাপুর বিধানসভাতেই সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে বলে খবর।
এই আবেদনের ফর্মে সরকারি আধিকারিক বা জনপ্রতিনিধিদের স্বাক্ষর দরকার। কিন্তু আধিকারিকেরা সেভাবে এই সব আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করছেন না বলে খবর। অধিকাংশই ভিড় করছেন জনপ্রতিনিধিদের কাছে।
একই ছবি দেখা যাচ্ছে সুজাপুরেও। আর নাওয়া-খাওয়া ভুলে এখন হাজার হাজার সেই সব আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করতে ব্যস্ত সুজাপুরের বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী। দলীয় কাজে বিধানসভার যে গ্রামেই যাচ্ছেন না কেন তাকে হাতের নাগালে পেয়ে আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নিচ্ছেন বাসিন্দারা। দলীয় কার্যালয় হোক বা চায়ের দোকান—সই চলছে দিনভর। বাদ নেই গাড়িতে বসে যাতায়াতের সময়টুকুও, তখনও হাতে পেন আর কাগজ।
সিএএ আর এনআরসির আতঙ্কে মালদহে আধার কার্ড, রেশন কার্ড সংশোধনে হিড়িক পড়েছে। প্রশাসন জানায়, এখন জেলায় প্রায় ৩২টি আধার এনরোলমেন্ট সেন্টারে আধার কার্ড সংশোধনের কাজ চলছে। তবে বেশিরভাগ সেন্টারগুলিতে অনেকদিন আগে যারা লাইনে দাঁড়িয়ে সিরিয়াল নম্বর নিয়েছিলেন, তাঁদেরই কাজ হচ্ছে, তাই ক্রমে লম্বা হচ্ছে লাইন। আর ওই আবেদন পত্রে সংশোধনকারীর পরিচয় নিয়ে সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা গেজেটেড অফিসারের, এছাড়া জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাংসদ, বিধায়ক, কাউন্সিলররা তা দিতে পারেন। অভিযোগ, সরকারি আধিকারিকেরা তাতে সই করছেন না। তাই সুজাপুরের বাসিন্দারা ছুটছেন ইশার কাছেই।
সূত্রের খবর, ইশা যেটুকু সময় কোতোয়ালিতে থাকছেন বেশিরভাগ সময়ই আবেদনপত্রে সই করছেন। রেহাই মিলছে না দলীয় কার্যালয়ে গিয়েও, সেখানেও কর্মীদের আবদারে অসংখ্য আবেদনপত্রে সই করতে হচ্ছে তাঁকে।
ইশা বলেন, ‘‘মালদহে থাকলে দিনভর আবেদনপত্রে সই করে যাচ্ছি।’’