উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক। নিজস্ব চিত্র।
ফের বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক উদ্ধার হল বীরভূম থেকে। এ বার রামপুরহাটের বড়জোলা গ্রামের একটি ক্যানেলের সেতুর নীচে উদ্ধার হল প্রচুর বিস্ফোরক। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকের মধ্যে রয়েছে ১১ হাজার ৯০০কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এবং ৮০ হাজার ডিটোনেটর। জেলা পুলিশের দাবি, এর আগে রাজ্যে এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও ডিটোনেটর পাওয়া যায়নি।
সপ্তাহখানেক আগেই এই জেলারই মল্লারপুরে একটি ক্লাবে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই গত ৪ জুলাই লাভপুরের দাঁড়কায় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত আবাসনে জোরালো বিস্ফোরণ হয়। দু’টি ঘটনার ক্ষেত্রেই কারা বিস্ফোরক মজুক করেছিল, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। তার মধ্যেই রামপুরহাটে উদ্ধার এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
মল্লারপুরের ঘটনার পরেই বিস্ফোরক ও বোমা আটক করতে জেলা জুড়ে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেয় নবান্ন। গত কয়েক দিন ধরেই জেলা জুড়ে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছিল পুলিশ। সেই অভিযানে, এক হাজার দেশি বোমাও উদ্ধার হয়। সোমবারও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। সে সময় নানুরের বন্দর গ্রাম থেকে ৬০টি তাজা বোমা, সদাইপুর থেকে ১৩টি এবং সিউড়ি থেকে ৩০-৪০টি দেশি বোমা উদ্ধার করে তারা। দুবরাজপুরের সিরসায় শেখ আসগর নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ২২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়। এই তল্লাশি অভিযান যখন চলছিল রাতেই গোপন সূত্রে খবর আসে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক লুকনো রয়েছে বড়জোলা গ্রামে। তার পরই মধ্যরাতে সেখানে হানা দেয় পুলিশ। এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক কী উদ্দেশ্যে মজুত করা হয়েছিল, কোথাও পাচারের চেষ্টা চলছিল কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: সব্যসাচীতে অনাস্থায় স্বাক্ষর মিলেছে ৩৫ জনের, বৈঠক ১৮ জুলাই
আরও পড়ুন: কলকাতা বিমানবন্দরে হাইড্রোলিক সাকশানে মাথা আটকে মৃত্যু? অভিযোগ অস্বীকার কর্তৃপক্ষের
বীরভূমে প্রচুর পাথর খাদান রয়েছে। মূলত পাথর ভাঙার কাজেই অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও ডিটোনেটর ব্যবহার করা হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, খাদানে ব্যবহারের জন্য বিস্ফোরক চোরাপথে চালানের চেষ্টা চলছিল। এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের যোগ থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, “স্থানীয় দুষ্কৃতী, না কি এর পিছনে বড় কোনও চক্র আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তবে এই ঘটনার সঙ্গে জঙ্গি যোগের বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। এই জেলাতেই আগে এবং সম্প্রতি বেশ কিছু জেএমবি জঙ্গির হদিশ মিলেছে। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকগুলোর সঙ্গে জঙ্গিদের কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।